তিনি বলেন, `করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরে বিশেষ করে অনলাইনে ক্রয় এবং বিক্রয় জনপ্রিয়তা বেড়েছে। পচনশীল জিনিস অর্থাৎ খাদ্য দ্রব্য থেকে শুরু করে ফলমূল তরিতরকারি এগুলো যেন ডাকের মাধ্যমে পাঠানো যায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ শেরে বাংলা নগরে আধুনিক স্থাপত্য নকশায় ১৫০ ফুট উঁচু গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা সংবলিত ১৪তলা বিশিষ্ট লেটার বক্সের আকৃতিতে নির্মিত ডাক বিভাগের নতুন সদর দপ্তর ‘ডাকভবন’এর উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ডাক অধিদপ্তরের সদর দপ্তর ‘ডাক ভবন’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের ডাক বিভাগকে আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করছে। সরকার কেবল ডাক ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করছে না, জনগণের সেবা বাড়ানোর জন্য ১১৮টি ডাক গাড়ি কিনেছে। পুরুষ ও নারী শ্রমিকদের গাড়ি চালানোর জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে শীতলকরণ ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছি যাতে পচনশীল জিনিস এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। আর এ ধরণের পণ্য পরিবহনের জন্য উপযুক্ত যানবাহন সংগ্রহের ব্যবস্থা নিচ্ছি যাতে জনগণ ডাকবিভাগের মাধ্যমে ফল ও শাক সবজিসহ পণ্য পরিবহন সেবা গ্রহণ করতে পারে।
আরও পড়ুন: কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তরুণদের মাছ চাষের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
‘কেউ নিজে রান্না করে আরেক জেলায় আত্মীয়ের কাছে খাবার পাঠাবেন, সেটাও যেন পাঠাতে পারেন। সেই জন্যই এই চিলিং সিস্টেমটা বা কুলিং সিস্টেমটা খুব দরকার,’ বলেন শেখ হাসিনা।
পচনশীল পণ্য পরিবহনের জন্য শুধুমাত্র যানবাহন সংগ্রহ যথেষ্ট হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডাক বিভাগে চিলিং চেম্বারের সুবিধা সংবলিত গুদাম ঘরের নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ডাক বাছাই ত্বরান্বিতকরণ ও পচনশীল দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য চিলিং চেম্বারের সুবিধা সংবলিত ওয়্যারহাউস যুক্ত ১৪টি অত্যাধুনিক মেইল প্রসেসিং ও লজিস্টিক সার্ভিস সেন্টার নির্মাণের কাজ সমাপ্তির পথে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সমস্যা নিরসনে কমনওয়েলথের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রাথমিকভাবে বিভাগীয় ও জেলা শহরে এ জাতীয় পরিবহন সেবা সরবরাহের লক্ষ্যে কাজ করছে কারণ আধুনিক মেইল প্রসেসিং, চিলিং সুবিধা, স্টোরেজ এবং ডিজিটাল সুবিধায় সজ্জিত ৩৮টি মডেল ডাকঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
শেখ হাসিনা ডাক অধিদপ্তরকে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এই সেবা সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্প নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ডাক অধিদপ্তরকে বলতে চাই যে আপনারা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চিলিং চেম্বার গুদাম সহ যাবতীয় সুবিধা সংবলিত ডাকঘর চালু করার জন্য জাতীয় প্রকল্প গ্রহণ করবেন।
সরকার প্রধান বলেন, শতবর্ষ পুরাতন আইনকে সময়োপযোগী করার জন্য সরকার ১৮৯৮ সালের ডাকঘর আইনকে হালনাগাদ ও সংশোধন করে ডাকঘর (সংশোধন) আইন-২০১০ প্রণয়ন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পোস্ট ই-সেন্টার প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের ৮ হাজার ৫০০টি ডাকঘরকে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যেই ডিজিটাল ডাকঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
সরকার এর আগে দেশে ৫ হাজার ২২৭টি ডিজিটাল কেন্দ্র স্থাপন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন মানুষ ডিজিটাল কেন্দ্রের মতো ডাকঘর থেকেও বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা গ্রহণ করতে পারে।
বিভিন্ন নতুন ডাক সেবার দিকে মনোনিবেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ডাক ট্র্যাক এবং ট্রেসিং, অনলাইন তদন্ত ব্যবস্থা, ডাক কল সেন্টার, ই-বাণিজ্য, ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার পরিষেবা / মোবাইল মানি অর্ডার, ডাক নগদ কার্ড, আন্তর্জাতিক ইলেকট্রনিক মানি অর্ডার (আইইএমও), মোবাইল আর্থিক পরিষেবা চালু করেছে।
বহুতল ডাক ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী একটি স্মারক ডাকটিকিটও প্রকাশ করেছেন।
ভবনটিতে সুসজ্জিত ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, আধুনিক পোস্টাল মিউজিয়াম, সুপরিসর অডিটোরিয়াম, ক্যাফেটেরিয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার, মেডিকেল সুবিধা, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ও সার্বক্ষণিক ওয়াইফাইসহ অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তিগত