মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির অর্থ আত্মসাতের মামলায় ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে বিচারিক আদালতের দেয়া এক কোটি ৫০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে এম সরোয়ার হোসেন বলেন, এ মামলায় তাকে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং দেড় কোটি টাকার অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ইতোমধ্যে তার দশ বছর সাজা ভোগ শেষ হয়েছে। এখন জরিমানার আদেশ স্থগিত করা হলো। এ প্রেক্ষিতে এ মামলায় তার কারামুক্তি পেতে কোন বাধা নেই। তবে ডেসটিনি ট্রি-প্লানটেশন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের মামলা থাকায় তিনি কারামুক্তি পাচ্ছেন না। তবে এ মামলায় তার জামিনের আবেদনের ওপর আগামী সপ্তাহে শুনানি হবে।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ-পাচার অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুলসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়।
আরও পড়ুন: ডেসটিনি পরিচালনায় বোর্ড গঠন করে দিলেন হাইকোর্ট
রাজধানীর কলাবাগান থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুই মামলায় মোট চার হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। দুই মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫৩। ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিনসহ ১২ জনের নাম দুটি মামলাতেই রয়েছে। আসামিদের মধ্যে আগে থেকেই কারাগারে আছেন মোহাম্মদ হোসেন ও রফিকুল আমিন।
মামলা দুটির মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলাটির বিচার শেষ হয়েছে গত ১২ মে। রায়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিনসহ ৪৬ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। রায়ে ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিনকে ১২ বছর কারাদণ্ড ও ২০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও এক কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, কোম্পানি প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদকে চার বছরের কারাদণ্ড ও ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
বাকি আসামিদের ৫ থেকে ৯ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। রায় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অনেকে কারামুক্তি পান, অনেকে কারামুক্তির পথে। এছাড়া ৩৯ আসামি এখনও পলাতক রয়েছে।
অন্যদিকে, ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে অর্থ আত্মসাতের মামলাটি বিচারিক আদালতে এখনও বিচারাধীন।
আরও পড়ুন: ডেসটিনির এমডি’র আপিল শুনবেন হাইকোর্ট