বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে ঢাকায় আবারো দূতাবাস চালুর বিষয়ে চিন্তা করছে আর্জেন্টিনা।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে এক বৈঠকে এ তথ্য জানান দেশটির পররাষ্ট মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক নীতি বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ক্লডিও রোজেনওয়েইগ।
ঢাকা সফররত আর্জেন্টাইন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেয়া এই সরকারি কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে সবক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে আন্তরিক আর্জেন্টিনা। বৈঠকে তার দেশে এফবিসিসিআইকে ব্যবসায়ীক সফরের আমন্ত্রণ জানান ক্লডিও রোজেনওয়েইগ।
আরও পড়ুন: অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায় মোদি
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য উন্নয়নের জন্য বেসরকারি খাতের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের সুপারিশ করেন। এফবিসিসিআই ও আর্জেন্টিনার শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সইয়েরও প্রস্তাব করেন তিনি।
একই সঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকার চারটি দেশ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ের বাণিজ্য ব্লক মারকোসারের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়াকে বেগবান করার জন্য আর্জেন্টিনার সহায়তা কামনা করেন সভাপতি।
তিনি জানান, মারকোসারভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ওষুধ, প্লাস্টিক পণ্য, সিরামিক, তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারে।
বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে আর্জেন্টাইন উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান সভাপতি।
আরও পড়ুন: ইউনেস্কোর ইন্টারগভর্নমেন্টাল কমিটিতে নির্বাচিত বাংলাদেশ
ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, ও মালদ্বীপে নিযুক্ত আর্জেন্টাইন রাষ্ট্রদূত হুগো গ্যাবি বলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে অনেক বেশি সময় লাগে। তাই তিনি মারকোসারের সঙ্গে অগ্রাধিকারমুলক বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের পরামর্শ দেন।
আর্জেন্টিনার ভারত দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিভাগের প্রধান ফ্রাঙ্কো অগাস্টিন সেনিলিয়ানি মেলচিওর বলেন, এশিয়া থেকে তার দেশ প্রচুর পরিমাণে টেক্সটাইল পণ্য আমদানি করে। বাংলাদেশও বস্ত্র ও প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির জন্য আর্জেন্টিনাকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসাবে বিবেচনা করতে পারে।
আর্জেন্টিনা থেকে তুলা, গুড়াদুধ, রসুন আমদানির আহ্বান জানান দূতাবাসের এগ্রিকালচার অ্যাটাশে মারিয়ানো বেহেরান। তিনি জানান, বাংলাদেশের কৃষিখাতের সক্ষমতা বাড়াতে কৃষিপ্রযুক্তি সরবরাহ করতে পারে আর্জেন্টিনা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমাদ চৌধুরী, মহাপরিচালক (আমেরিকাস) নায়েম উদ্দিন আহমেদ, সহকারী সচিব (আমেরিকাস) তারিক মাহমুদ পাশা। তারা দুদেশের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, পরিচালক আবুল কাশেম খান ও আমজাদ হোসাইন এবং মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।