নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বন নির্ভরশীল উপকূলের হাজার হাজার জেলে জাল-নৌকা নিয়ে সুন্দরবনে মাছ শিকারে যেতে শুরু করেছেন।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জুলাই-আগস্ট মাস মাছের প্রজনন মৌসুম। এ সময় মাছ ধরা হলে ডিমওয়ালা ‘মা’ মাছ মারা পড়ে। সুন্দরবনে অসাধু এক শ্রেণির জেলেরা এক সাথে বেশি এবং বড় মাছের আশায় বনের ছোট-বড় খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে থাকেন। এতে মৎস্য সম্পদসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীও ধ্বংসের মুখে পড়ে। তাই মাছের প্রজনন ও বিষ দিয়ে মাছ শিকার রোধে বনবিভাগ এই দুই মাসে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
সুন্দরবন সংলগ্ন মোংলার জয়মনিরঘোল এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম ও তালেব খান জানান, বনবিভাগ নিষেধাজ্ঞা জারির আগে জেলেদের নৌকা প্রতি ১ লাখ থেকে সোয়া লাখ টাকা পর্যন্ত দাদন দেয়া ছিল। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলেরা দাদনের টাকা বসে বসে খেয়ে শেষ করেছেন। এখন নতুন করে আবার দাদন দিয়ে তাদেরকে সুন্দরবনে পাঠাতে হবে। এতে এ মৌসুমে খরচ উঠবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তারা।
মোংলা বাজারের মৎস্য আড়তদার দ্বীন ইসলাম ও জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান, চিলা, জয়মনি, গাববুনিয়া, মিঠাখালী, বাশতলাসহ উপজেলার শত শত জেলে দীর্ঘদিন বসে থাকার পর যা আয় হবে তা দিয়ে দাদন পরিশোধ করবেন নাকি সংসার চালাবেন এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বন অপরাধ দমন বিশেষ করে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধে দুই মাস সুন্দরবনে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। যেহেতু নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে তাই ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলেরা পাস নিয়ে বনে ঢুকতে শুরু করেছেন। রবিবার শুধু চাঁদপাই স্টেশন থেকেই পাস নিয়ে প্রায় দেড়শ’ জেলে সুন্দরবনে ঢুকেছে। এছাড়া অন্যান্য স্টেশন থেকেও পাস নিয়ে জেলেরা বনে যাচ্ছেন।’