টাকা পাচার করার অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চে শুনানিকালে আদালত এ মন্তব্য করে।
আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ৯ ডিসেম্বর সময় রেখেছে। এ সময়ের মধ্যে বিচারিক আদালতে প্রশান্ত কুমারের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে প্রতিবেদন, মামলার এফআইআর ও সম্পত্তি-অর্থ জব্দের আদেশ আদালতে দাখিল করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) বলা হয়েছে।
শুনানিতে দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
আরও পড়ুন: অর্থ পাচারকারীদের দেশের শত্রু উল্লেখ করে তাদের তথ্য চেয়েছে হাইকোর্ট
প্রশান্ত কুমারকে ধরতে দুদকের ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেপ্তার করতে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বঃপ্রণোদিত আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
দুদক এ আদেশ অনুসারে আজ একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সেখানে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে আবেদন করা হয়েছে বিচারিক আদালতে।
শুনানিতে আদালত বলে, যারা দুর্নীতিবাজ, যারা অর্থ পাচার করে তাদের ছাড় দিলে চলবে না। তারা যত বড় রুই-কাতল হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সবার উচিত হলো দেশের সম্পদ রক্ষা করা।
আদালত দুর্নীতিবাজদের বিষয়ে আরও বলে, তারা যাতে আইনের জালে ধরা পড়ে সে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। আমাদের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে। জাতির জনক স্বপ্ন দেখেছিলেন এ দেশকে সোনার বাংলা গড়ার। কাজেই ওনার যে স্বপ্ন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণে হাইকোর্টের ১১ নির্দেশনা
প্রশান্ত কুমার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি এক আদেশে প্রশান্ত কুমারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
এর মধ্যে দেশে নির্বিঘ্নে ফিরতে প্রশান্ত কুমার আদালতের কাছে আবেদন করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের কাছে একটি পত্র দেন। ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট এক আদেশে দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে বলে। কিন্তু ২৪ অক্টোবর ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের আইনজীবী দুর্নীতি দমন কমিশন এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে জানান, প্রশান্ত কুমার নির্ধারিত ২৫ অক্টোবর দেশে ফিরছেন না।