সচিবালয়ের মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে দেড় কোটি মানুষের জন্য টিকার তিন কোটি ডোজ এবং আরও তিন কোটি মানুষের জন্য ছয় কোটি ডোজ আগামী মে-জুনের মধ্যে পাব।’
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ টিকা বিতরণে বাংলাদেশ কি প্রস্তুত?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, টিকাদানের জন্য প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে এবং কোভিড টিকাদানের জন্য সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিকে (ইপিআই) ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হবে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় টিকার বিষয়টি উঠে আসে বলে সচিব জানান।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ টিকা কোনো ‘জাদুর কাঠি’ নয়: ডব্লিউএইচও
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরকার এখন শুধুমাত্র অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ে ভাবছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়া অন্য টিকার ব্যাপারেও সরকার নমনীয় থাকবে।
মাস্ক ব্যবহার নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী ‘মাস্ক নেই তো সেবা নেই’ নীতি কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
করোনাভাইরাস রোধে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি তিন কোটি ডোজ টিকা আনতে ৫ নভেম্বর ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের সাথে সমঝোতা স্মারক সই করে বাংলাদেশ সরকার।
আরও পড়ুন:করোনার ভ্যাকসিন কিনতে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের সাথে সরকারের চুক্তি
সমঝোতা অনুযায়ী, বেক্সিমকোকে অক্সফোর্ডের তৈরি সার্স-কোভ-২ এজেডডি ১২২২ (অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা) সরবরাহ করবে সিরাম ইনস্টিটিউট।
রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে কোভিড-১৯ টিকা সংগ্রহের জন্য গত ২ ডিসেম্বর একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
কোভিড-১৯ টিকা ক্রয়ের জন্য অর্থমন্ত্রণালয় গত ১৬ নভেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়।
এদিকে, কোভিড-১৯ টিকার কর্মসূচিতে তথ্যের স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু জবাবদিহি প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। রবিবার ‘কোভিড-১৯ টিকা বাংলাদেশে কে, কখন, কীভাবে পাবে?’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে এ মত দেন তারা।
আরও পড়ুন: টিকা পাওয়াসহ বাংলাদেশের এখন আরও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে: ডা. ফ্রিডম্যান
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের আহ্বায়ক ড. মোশতাক রাজা চৌধুরী তার এক প্রতিবেদনে বলেন, কোভিড টিকা কর্মসূচির জন্য বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তুত সেটাও বিবেচনায় আনতে হবে। আর তাই কমিউনিটিকে কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায় সে জন্য এখন থেকেই চিন্তা করতে হবে।
আইসিডিডিআর,বির ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান ফেরদৌসী কাদরী বলেন, বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সন্দেহ-উদ্রেকের ঊর্ধ্বে উঠে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সর্বাবস্থায় টিকা কর্মসূচিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য প্রথমে উপযুক্ত গ্রহীতা নির্বাচন করতে হবে। এরপরে মনিটরিং করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: সরাসরি করোনার টিকা ক্রয়ের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন
ইউনিসেফের কোল্ড চেইন স্পেশালিস্ট জনাব হামিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে টিকা সংরক্ষণ ও বিতরণের জন্য সুষ্ঠু নীতিমালা ও তার বাস্তবায়ন আবশ্যক।
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। তিনি আরও একবার তথ্যপ্রবাহে স্বচ্ছতা, বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জবাবদিহি ইত্যাদির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।