অভ্যন্তরীণ নৌপথে দুই ঈদযাত্রাসহ দেশে গত ছয় মাসে ৫৪ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৫০ জন আহত এবং নিখোঁজ হয়েছেন ৩৪ জন। তবে এ সময়ে বড় ধরনের কোনো লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটেনি।
এ ছাড়া হতাহতের তালিকায় কোনো নারী ও শিশু নেই।
বুধবার (১৯ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এসসিআরএফের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নৌ দুর্ঘটনার উপর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে এবং ১২টি বাংলা জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, নয়টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থা ও ছয়টি আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ নৌ দুর্ঘটনার দুই সপ্তাহ পর নিখোঁজ ব্যক্তিদের জীবিত খুঁজে পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের অধিকাংশেরই সলিল সমাধি ঘটেছে। এ হিসেবে ছয় মাসে নিহতের সংখ্যা হবে ৯১।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে দুর্ঘটনার কবলে কন্টেইনারবাহী জাহাজ
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে পাঁচটি নৌ দুর্ঘটনায় আটজন নিহত, পাঁচজন আহত ও ছয়জন নিখোঁজ হয়েছেন।
ফেব্রুয়ারিতে ১৩টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত, ২৪ জন আহত ও ১৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন।
মার্চে সাতটি নৌ দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে নয় ও পাঁচ। এ মাসে নৌ দুর্ঘটনায় কেউ নিখোঁজ হননি।
এপ্রিলে নয়টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত ও নিখোঁজের সংখ্যা যথাক্রমে ছয় ও তিন।
মে মাসে সাতটি দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত, তিনজন আহত ও তিনজন নিখোঁজ হয়েছে।
জুন মাসে নৌ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৩টি। এতে নিহত, আহত ও নিখোঁজ হয়েছে যথাক্রমে ১০, সাত ও আটজন।
দুর্ঘটনা কবলিত নৌযান:
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনা কবলিত নৌযানগুলোর মধ্যে রয়েছে যাত্রীবাহী ট্রলার, স্পিডবোট, তেলবাহী, বাল্কহেড (বালিবাহী নৌযান), পণ্যবাহী ও লাইটার জাহাজ। এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ ট্রলার ও বালুবাহী নৌযানের অনুমোদিত নকশা, বার্ষিক ফিটনেস সনদ (সার্ভে) ও নিবন্ধন নেই।
এসসিআরএফের পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনার ১৩টি কারণ চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সারা দেশে বিপুলসংখ্যক অবৈধ নৌযান চলাচল, অদক্ষ ও সনদবিহীন চালক, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, নৌ মন্ত্রণালয়ের আদেশ লঙ্ঘন করে রাতে বালিবাহী নৌযান চলাচল।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে জাহাজ দুর্ঘটনা: ৩ জনের লাশ উদ্ধার
এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পরিবহন অধিদপ্তর ও নৌ পুলিশের তদারকির অভাব, ভ্রাম্যমান আদালতের স্বল্পতা এবং নৌপথে নাব্যসংকট, বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, সব দুর্ঘটনার যথাযথ তদন্ত না হওয়াও কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়ন না করা, আইন ভঙ্গকারী ও দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের যথাযথ শাস্তি না দেওয়া ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া।
আরও পড়ুন: সুগন্ধায় জাহাজ দুর্ঘটনা: ২৩ ঘন্টা পর ইঞ্জিনরুম থেকে ১ জনের লাশ উদ্ধার