শনিবার পঞ্চগড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক বিএনপি কর্মী নিহত এবং পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় ৮১ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা প্রায় দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করেছে পুলিশ।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা জানান, রবিবার পঞ্চগড় সদর থানার পাঁচ উপপরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে এসব মামলা করেন।
তিনি বলেন, পুলিশ শনিবার রাতে এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে আট বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মীকে আটক করেছে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, সরকারি কাজে বাধা দেয়া, সরকারি কর্মকর্তাদের মারধর, নৈরাজ্য সৃষ্টি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করা হয়েছে।
এদিকে নিহত ময়না দীঘি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আবদুর রশিদ আরেফিনের (৫০) লাশ রবিবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, আমাদের ভাই মারা গেছেন। আরেফিনের দাফনের পর পরিবার ও দলের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেব।’
শনিবার দুপুরে বিএনপির ১০ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে দলটির পঞ্চগড়ভিত্তিক নেতাকর্মীরা স্থানীয় দলীয় কার্যালয়ে জড়ো হন।
আরও পড়ুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপায়
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা কোনো মিছিল বের করার আগেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং রাবার বুলেট ছুড়ে সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করা হয়।
বিএনপি কর্মীরা শেষ পর্যন্ত ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং তারপর প্রায় ৯০ মিনিট ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
সন্ধ্যায় অতিরিক্ত বাহিনী আসার পরই পুলিশ শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যা ৬টার পর পরিস্থিতি ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
পঞ্চগড়ের এসপি এসএম সিরাজুল হুদা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আরেফিনের মৃত্যু হয়েছে।
আরেফিনের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত ১