কপোতাক্ষ নদের পাইকগাছার বিস্তীর্ণ এলাকায় ফের ভয়াবহ নদী ভাঙন শুরু হয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলীর মালোপাড়া, কপিলমুনির আগড়ঘাটা, রামনাথপুর, সোনাতনকাটি, মাহমুদকাটি, গোলাবাটি, কাশিমনগরসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকশ হেক্টর জমির ঘরবাড়ি, গাছপালা, রাস্তা, কবরস্থান, ফসলি জমির পাশাপাশি বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
জেলে পল্লীর বহু পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়ে পেশাবদল করে অন্যত্র বসবাস করছে। সর্বশেষ পরিস্থিতিতে কাশিমনগর হাট-বাজার, গোলাবাটি আশ্রয়ণ প্রকল্প, মাহমুদকাটি ও রামনাথপুর এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে চরম ঝুঁকির মুখে রয়েছে। যেকোনো সময় সেখানকার ভূমি ধ্বসে বিলীন হতে পারে নদী গর্ভে।
এদিকে কপোতাক্ষের ভয়াবহ ভাঙনের খবরে উপজেলা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যসহকারী মো. আবু তাহের গাজী মাহমুদ কাটি, গোলাবাটি ও কাশিমনগর বাজার এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি জরুরি ভিত্তিতে রিংবাঁধের জন্য মাহমুদকাটির ৩৭৫ মিটার, গোলাবাটির ৩০০ ও কাশিমনগর বাজারসহ জেলেপল্লীর ২০০ মিটার এলাকা চিহ্নিত করেন। এসময় ভাঙনরোধে বিষয়টি পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলেও জানান।
স্থানীয়রা জানান, কপোতাক্ষের ভয়াবহ ভাঙনে উপজেলার রাড়ুলী জেলে পল্লী, আগড়ঘাটা, রামনাথপুরসহ আশপাশের কয়েকশ হেক্টর এলাকায় বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কবরস্থানসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর সর্বশেষ কপোতাক্ষের ভয়াবহ ভাঙন ও তীব্র স্রোতের মুখে মাহমুদকাটি, গোলাবাটি, কাশিমনগর জেলেপাড়াসহ স্থানীয় কাশিমনগর বাজার চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভয়াবহ ভাঙনের কবলে যেকোনো সময় এলাকাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় অনেকের নির্ঘুম রাত কাটছে বলেও জানান ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন: পাইকগাছায় ভেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
জানা গেছে, গত প্রায় ৩ যুগ ধরে কপোতাক্ষের এসব এলাকায় কখনও করাল গ্রাস আবার কখনও নাব্যতা হ্রাস বিদ্যমান। নাব্যতা হ্রাসের কবলে কপোতাক্ষ নিশ্চিহ্ন হতে থকলে আন্দোলনের মুখে সরকার কপোতাক্ষ খননের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে ফের স্রোতস্বিনী করে তোলা হয়। তবে কোথাও কোথাও পরিকল্পনাহীনতায় বাঁক (মোড়) সরলীকরণ না হওয়ায় বর্তমানে তার বিপরীত পাশে ভয়াবহ ভাঙন ও বাঁক এলাকায় ব্যাপকহারে পলি ভরাট শুরু হয়েছে।
কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান মো. কওছার আলী জোয়ার্দ্দার বলেন, ইতোপূর্বে তারা স্থানীয়ভাবে সহযোগিতা ও স্বেচ্ছাশ্রমে আগড়ঘাটা এলাকায় ভাঙনরোধে বেশ কিছু করলেও তা ভাঙন প্রতিরোধে পর্যাপ্ত নয়। বিষয়টি তারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার জানান, ইতোমধ্যে কপোতাক্ষের পাইকগাছা উপজেলার ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধে বাঁধ বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।