অভাব অনটনের কারণে অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় পড়ালেখা ছেড়ে দেন মা মুঞ্জুয়ারা খাতুন। সন্তানদের পড়ালেখা করাতে গিয়ে আবারও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ জন্মে তার। অদম্য ইচ্ছাশক্তি থেকেই তিনি ২০ বছর পর আবার পড়ালেখা শুরু করেন। এর সফলতা হিসাবে তিনি এবার ছেলের সঙ্গে এসএসসি পাস করে সারাদেশে সাড়া ফেলে দিয়েছেন।
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। একসঙ্গে পাস করে আলোচনার শীর্ষে উঠে আসা এই মা-ছেলে হলেন-ওই গ্রামের ভ্যানচালক আব্দুর রহিমের স্ত্রী মুঞ্জুয়ারা খাতুন এবং তাদের ছেলে মেহেদী হাসান।
জানা গেছে, ছেলে মেহেদী হাসান ভাঙ্গুরা উপজেলার খানমরিচ বিএম স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোকেশনাল শাখা থেকে জিপিএ৪ দশমিক ৮৯ এবং মা তাড়াশ উপজেলার শামীমা জাফর মৎস্য ইনস্টিটিউট থেকে জিপিএ৪ দশমিক ৯৩ পেয়েছেন।
মুঞ্জুয়ারা জানান, ২০ বছর আগে অভাব-অনটনের সংসারে বাবা বিয়ে দিয়ে দেন। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসে আর পড়ালেখা করা হয়ে ওঠেনি। বিয়ের চার বছরের মাথায় ছেলের জন্ম হয়, পরে একটি মেয়ে হয়। সন্তানদের পড়ালেখা করাতে গিয়ে আবারও পড়াশোনার প্রতি টান অনুভব করেন তিনি। পরে তিনি ভর্তি হন স্কুলে।
তিনি জানান, তার পড়ালেখার পিছনে স্বামীর উৎসাহ আর সহযোগিতা ছিল। তাই সে এত ভালো ফলাফল করতে পেরেছেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে এসএসসিতে ৫২ ও ৪৫ বছর বয়সীর চমকপ্রদ ফলাফল
তিনি ন্যূনতম ডিগ্রি পাস করতে চান। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থার মধ্যে ছেলেমেয়ের পাশাপাশি নিজের লেখাপড়া কতোটা চালিয়ে নিতে পারবেন তা নিয়ে চিন্তিত বলেও জানান তিনি।
ছেলে মেহেদী হাসান জানান, লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই। মায়ের সঙ্গে এসএসসি পাস করে আমি গর্ববোধ করছি।
মন্জুয়ারার স্বামী আব্দুর রহীম জানান, তার স্ত্রী ও ছেলে একসঙ্গে পাস করায় তিনি খুশি। তিনি তার স্ত্রীকে আরও পড়াতে চান।
খানমরিচ বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মোফাজ্জল হোসেন জানান, মেহেদী হাসান আমার প্রতিষ্ঠানের ভোকেশনাল শাখার নিয়মিত শিক্ষার্থী। এখন শুনলাম, ছেলের সঙ্গে তার মা এসএসসি পাস করেছেন, বিষয়টি সত্যিই আনন্দের।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান জানান, এ ধরনের উদাহরণ সমাজের জন্য খুবই ইতিবাচক। মা-ছেলের এই সফলতা অনেককেই উদ্দীপ্ত করবে।
আরও পড়ুন: এসএসসি ফলাফল ২০২২: গড় পাসের হার ৮৭.৪৪%
জয়পুরহাটে প্রতিমা বির্সজনের সময় নদীতে ডুবে ২ এসএসসি ফলপ্রার্থী নিখোঁজ