পাবনায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলম (৪০) হত্যা মামলার প্রধান আসামি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদরের ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেযারম্যান আবু সাঈদ খান (৫২) সহ তিনজনকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
পাবনা জেলা ও দায়রা জজের কৌসুলি এডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বরিশালে মাদক মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন, ভাঁড়ারা ইউনিয়নের নলদহ গ্রামের মৃত হাচেন খাঁর ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান (৫২), বিজয়রামপুর গ্রামের মহির বিশ্বাসের ছেলে নাদের বিশ্বাস ( ৫৩), নলদহ গ্রামের জেলেমুদ্দিনের ছেলের সমো (৩১)।
এই এসময় দুই জনকে জামিন দেয়া হয়। তারা হলেন- ভাঁড়ারা ইউপির দিঘলকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আলম ( ৩৩), চকভাড়ারা গ্রামের মৃত রানু শেখের ছেলে শামসুল হোসেন (৪০)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভাঁড়ারা ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলম হত্যা মামলায় বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদসহ ৩৪ জন আসামি তাদের মধ্যে পাঁচ আসামি জেলা দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে। এ সময় বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে বর্তমান চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। দুই জনের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। এই মামলার বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
এদিকে চেয়ারম্যানকে একনজর দেখার জন্য আদালত চত্বরে শত শত সমর্থক জড়ো হোন। এসময় পাবনা কোর্ট চত্বর থেকে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টুনিতে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, চতুর্থধাপে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর পাবনা সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হত্যার কারণে ভাঁড়ারা ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ স্থগিত হওয়ায় বাকি ৯টি ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউপি ভোটকে সামনে রেখে গত ১১ ডিসেম্বর সকালে কোলাদি গ্রামের চারাবটতলা এলাকায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া মার্কা) সুলতান মাহমুদের ১৫ থেকে ২০ জন সমর্থক ভোটের প্রচারণায় বের হন।
এ সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানের লোকজনের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে সুলতান মাহমুদের চাচাতো ভাই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলমসহ দুই পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সময় ইয়াসিন আলম মারা যান। এ ঘটনায় পরেরদিন ১২ ডিসেম্বর রাতে নিহত ইয়াসিন আলমের বাবা মোজাম্মেল হক বাদি হয়ে ৩৪ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিন নির্বাচন কমিশন থেকে ইউপির সকল পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়।