অস্ত্রোপচারের সময় পেটে সার্জিক্যাল আর্টারি (কাঁচি) রেখে সেলাই করে দেয়ার ২০ বছর পর এক নারীর পেট থেকে সেই কাঁচি অপসারণ করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই কাঁচি অপসারণ করা হয়েছে।
বিষয়টি ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন। তার তত্ত্বাবধায়নেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই নারী।
ভুক্তভোগী নারীর নাম বাচেনা খাতুন। তিনি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী।
জানা যায়, ২০০২ সালের ২৫ মার্চ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাজা ক্লিনিকে পিত্তথলির পাথর অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন বাচেনা খাতুন। অস্ত্রোপচার করেছিলেন সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তার সঙ্গে সহকারী হিসেবে ছিলেন রাজা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা ও বাচেনার অ্যানেস্থেসিয়া করেন ডা. তাপস কুমার।
অস্ত্রোপচারের এক সপ্তাহ পর বাচেনা খাতুনকে প্রেসক্রিপশন দিয়ে ছাড়পত্র দেয়া হয়। কিন্তু সুস্থ হতে পারেননি বাচেনা খাতুন। অস্ত্রোপচারের সময় পেটের মধ্যে সার্জিক্যাল আর্টারি রেখেই সেলাই করে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। পুনরায় ডা. রাজার শরণাপন্ন হলে তিনি ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা বলে ফেরত পাঠান।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কলেজছাত্র নিহত
২০-২৫ দিন আগে রাজশাহীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্স-রে পরীক্ষা করালে তার পেটে কাঁচির উপস্থিতির কথা জানা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট (সিনিয়র) ডা. ওয়ালিউর রহমান বলেন, গত ৪ জানুয়ারি থেকে বাচেনা খাতুনকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তার অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকসের জন্য অস্ত্রোপচার পিছিয়ে যাচ্ছিল। ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ থাকায় আজ তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তার পেটে থাকা দীর্ঘদিনের সার্জিক্যাল আর্টারি (কাঁচি) অপসারণ করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় গত ৫ জানুয়ারি তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. জাওয়াহেরুল ইসলাম।
তিনি জানান, কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর গাংনীর সেই রাজা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণের বার উদ্ধার
চুয়াডাঙ্গায় বছরের সর্বনিম্ন ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা, জনজীবন বিপর্যস্ত