প্রাণিসম্পদ সেবাকে জরুরি সেবা হিসেবে ঘোষণার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে জরুরি বিভাগ রয়েছে। যেকোনো রোগীকে সেখানে প্রথম সেবা দেওয়া হয়। প্রাণিসম্পদ খাতেও জরুরি সার্ভিসের প্রয়োজন রয়েছে। প্রাণি সম্পদের সম্ভাবনাকে সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে হলে যারা প্রাণিকে সেবা দেয়, তাদের সেবাকেও জরুরি সেবার অর্ন্তভুক্ত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এ খাতকে সামনে নিয়ে যেতে হলে এটি দরকার। তাই প্রাণিসম্পদসেবাকে জরুরি সেবা হিসেবে ঘোষণার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: পশুর জন্য নিরাপদ উপায়ে প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
মঙ্গলবার (৪ জুন) সকালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প ও পরিপ্রেক্ষিতের আয়োজনে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জার্নালিস্ট ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আওতায় নিবিড় প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, কোরবানিতে চাহিদা অনুযায়ী গবাদিপশুর যোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। দেশবাসী এবার ঈদুল আজহা শান্তিপূর্ণভাবে উপভোগ করতে পারবে। কোনো চিন্তার কারণ নেই।
চামড়া প্রাণিসম্পদের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চামড়ার দাম নির্ধারণ, প্রক্রিয়াকরণ, ও বাজারজাতকরণের কাজে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন।
প্রাণিসম্পদের গুরুত্ব নিয়ে তিনি বলেন, আমিষ জাতীয় খাবার খেলে সুষমভাবে দেহ ও মনের গঠন হয়। তাই এ খাতকে অবহেলা করে উন্নতি করা যাবে না। এখাতে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। মানুষের জীবনে পূর্ণাঙ্গ সফলতা চাইলে প্রাণিসম্পদকে বাদ দিয়ে তা করা সম্ভব নয়।
আব্দুর রহমান বলেন, ‘প্রাণিসম্পদে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব নয় বলেও তিনি এসময় মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক ফেলোশিপের এ ধরনের উদ্যোগে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বেশি লাভবান হবে। কারণ সাংবাদিকেরা প্রান্তিক মানুষের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করেন। আর মানুষের মানুষের স্বপ্ন নিয়ে যারা কাজ করেন তারা রাষ্ট্রের গৌরবের অংশ।
অনুষ্ঠানে ফেলোশিপ সম্পন্নকারী প্রত্যেককে ৭৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয় এবং ফেলোশিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ইলেক্ট্রনিক এবং প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া এ দুটি ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীকে অর্থ পুরস্কার ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
প্রথম স্থান অর্জনকারীকে ১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারীকে ৫০ হাজার টাকা ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীকে ২৫ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়।
প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন ডেইলি অবজারভারের সিনিয়র রিপোর্টার মো. মিজানুর রহমান, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে বাংলা ইনসাইডারের স্টাফ রিপোর্টার শান্ত সিংহ, তৃতীয় হন বিজনেস পোস্টের স্টাফ রিপোর্টার রোকন উদ্দীন।
ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন বাংলাভিশনের প্রতিবেদক মাইনুল ইসলাম শোভন, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন একুশে টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার তৌহিদুর রহমান ও তৃতীয় হন জিটিভির প্রতিবেদক মো. বায়েজিদ হোসেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সভাপতিত্বে এবং পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এটিএম মোস্তফা কামাল, টিভি টুডের প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল, ডিবিসি নিউজের এডিটর প্রণব সাহা, এলডিডিপি প্রকল্পের পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মো. আব্দুর রহিম, এলডিডিপির চিফ কো-অর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রাব্বানী বক্তব্য দেন।
এছাড়াও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুকনুজ্জামান অঞ্জন ও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পরিপ্রেক্ষিতের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ফাতেমা ইসলাম।
আরও পড়ুন: চোরাই পথে গরু প্রবেশ ঠেকাতে মনিটরিং করা হচ্ছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
খামারিরাই প্রাণিসম্পদ খাতের প্রকৃত সেলিব্রেটি: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী