যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারপিট ও নির্যাতনের অপরাধে দায়ের করা মামলায় চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামসুদ্দোহাকে (৪০) দুই বছর ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১(গ) ধারায় অপরাধের অভিযোগ প্রমাণীত হওয়ায় এ রায় ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার বিকালে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচার জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায়ের আদালত এই রায় প্রদান করেন।
রায় ঘোষণার সময় পুলিশ কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা আদালত উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক মো. শামসুদ্দোহা গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের নুরুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত
ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট স্বপন পাল জানান, পুলিশ পরিদর্শক শামসুদ্দোহা চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায়। তার স্ত্রী ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় ফারজানা খন্দকার তুলির দায়ের করা নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও জানান মামলার বাদী ফারজানা খন্দকার তুলি জানান, গত ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট পারিবারিকভাবে শামসুদ্দোহার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। বিয়ের পর ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত আমি ফরিদপুরে আমার বাবার বাড়িতেই অবস্থান করি। পরবর্তীতে ওই বছরের নভেম্বর মাসে তার চাকরি করার কারণে যশোরে নিয়ে যায় আমাকে। সেখানে ভাড়া বাসায় বসবাস করতে শুরু করি। এর কয়েকদিন পর থেকেই তার আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করি।
তিনি আরও জানান, `ওই সময় জানতে পারি অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত সে। আমি বাধা দিলে ওই সময় থেকেই আমার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। বিভিন্ন সময় আমাকে মারপিট করতো শামসুদ্দোহা।'
পাবলিক প্রসিকিউটর আরও বলেন, ‘এর কিছুদিন পর ফারজানার কাছে তার প্রমোশনের জন্য ৭০ লাখ টাকা বাবার কাছ থেকে এনে দিতে বলে। আমি ওই সময় ১৫ লাখ টাকা এনে দিই, কিন্তু তিনি তাতে খুশি হননি। এরপর আরও নির্যাতন বাড়তে থাকেন। প্রতিদিন নেশা করে এসে আমাকে মারপিট করতেন। ওই সময় আমি সেখান থেকে বাবার বাড়ি চলে আসি। তখন আমি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাবার বাড়িতেই আমি পুত্র সন্তানের মা হই। সন্তানের বয়স এখন দুই বছর। সন্তানের মুখ দেখেননি তিনি।
অ্যাড. স্বপন পাল বলেন, মঙ্গলবার বিকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচার জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায় এ সাজা ঘোষণা করেন।