স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন এবং থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাস্তায় কিংবা ফ্লাইওভারে কোনো কনসার্ট ও নাচগানের আয়োজন করা যাবে না।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এর আগে বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটে আইনশৃঙ্খলা ও আনুষঙ্গিক বিষয় সংক্রান্ত সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।
মন্ত্রী বলেন, সবসময় এ ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা জাতীয় দিবসগুলো উদযাপনের সময় আমরা বসি। আমরা দুর্গোৎসবের সময় বসেছিলাম, আমাদের ধারণা ছিল, ৩১ হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ হবে। সেই অনুযায়ী প্রায় ৩২ হাজারের কাছাকাছি দুর্গোৎসবের পূজামণ্ডপ হয়েছে।
এছাড়া এবার তেজাগাঁও ও রমনাসহ পাঁচ হাজার ৬৮২টি (দু-একটি বেশি-কম হতে পারে) গির্জায় বড়দিন পালন হতে পারে।
আরও পড়ুন: কোনোভাবেই রাজপথে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সবগুলো গির্জার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।
বড় গির্জাগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি খ্রিস্টান সম্প্রদায় থেকে স্বেচ্ছাসেবী থাকার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
কূটনৈতিক পাড়ায় বেশিরভাগ কূটনীতিক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী বিশেষ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনী মোতায়েন করা হবে।
গির্জাগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসানো থাকবে।
গুরুত্বপূর্ণ গির্জাগুলোতে সুইপিং করা হবে, ভিআইপিদের চলাচলের সময় যেটা করা হয়। ডগ স্কোয়াডও থাকবে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত গির্জা পার্শ্ববর্তী এলাকায় পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদাপোশাকের গোয়েন্দারাও থাকবে। প্রতিটি শহরে র্যাবের টহল থাকবে। খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে র্যাবের টহল জোরদার করা হবে।
এছাড়া কোনো অঘটন ঘটলে ৯৯৯-এ ফোন দেয়া যাবে। সেখানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা জানেন, ২৫ ডিসেম্বরের পরে থার্টি ফার্স্ট নাইট হয়ে থাকে। এদিন আতশবাজি, ভুভুজেলা, পটকা না-ফোটাতে আমরা অনুরোধ রাখছি। এগুলো ফুটিয়ে জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টি না করতে বলা হয়েছে। থার্টি ফার্স্ট নাইটে ফ্লাইওভার ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট কিংবা নাচগানের আায়োজন করা যাবে না।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনো বহিরাগত ব্যক্তি যাতে ঢুকতে না পারেন, সে জন্য ঢাবি কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সেখানে প্রবেশ সীমিত করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে,’ জানান আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য অপব্যহাররোধে ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অভিযান চলবে। যে কোনো নাশকতারোধে সারা দেশে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হবে। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উৎযাপনে গির্জা ও ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে ঢাকা মহানগরীসহ দেশের সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে স্বাভাবিক থাকে, তার ব্যবস্থা থাকবে।
‘৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টা সব বার বন্ধ থাকবে। দেশের পর্যটন এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এ সময় অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় উদ্ধার টিমসহ অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি ও অগ্নিনির্বাপণ কর্মী সতর্ক থাকবেন।’
মাঠে কনসার্ট করা যাবে কিনা; প্রশ্নে তিনি বলেন, মহানগর পুলিশের অনুমতি নিয়ে কনসার্ট করা যাবে। কোনো রাস্তায় যানজট করা যাবে না। কেউ যাতে অবৈধভাবে মাদক কারবারী করতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হবে।
তবে এই উৎসব উপলক্ষ্যে কোনো থ্রেট (হুমকি) আছে কিনা; জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এমন কিছু নেই। আমরা মনে করছি, জঙ্গিবাদের উত্থানের একটি চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা আগেই তা চিহ্নিত করেছি।
তারপরেও আমরা সবাই সজাগ থাকবো, যাতে কোনো অঘটনা না ঘটে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ফারদিন নূর: র্যাব, ডিবি'র তদন্তে আস্থা প্রকাশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর