মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি মূল্যবোধভিত্তিক না হয়ে নিতান্তই লেনদেনমুখী হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান। তিনি বলেন, বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের মূল্যায়ন করবে ওয়াশিংটনের নতুন প্রশাসন।
ওয়াশিংটনভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক কুগেলম্যান বলেন, ‘প্রথম দিকে মার্কিন প্রশাসন সম্পর্কে আমরা যতটুকু ধারণা করতে পারি, সেই অনুসারে যদি বাংলাদেশের দিকে চোখ দেই, তাহলে দুটো দিকে আমাদের আলোকপাত করতে হবে—বাণিজ্যিক ও ভূরাজনৈতিক। দ্বিপক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে আলোচনায় বাণিজ্য থাকবে। এটিই নিয়মিত বিষয় হয়ে থাকবে।’
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক: ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিনি। কসমস গ্রুপের দাতব্য প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে আমন্ত্রণ পেলেন ইউএনবির প্রধান সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খান
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতউল্লাহ খান। সঞ্চালনা করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
এতে বক্তব্য রাখেন দ্য বে অব বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের সভাপতি ও কসমস ফাউন্ডেশনের ইমেরিটাস উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক আহমদ করিম, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের সম্ভাবনা নিয়ে মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ আপাতত ট্রাম্পের চোখে পড়তে যাচ্ছে না। সম্ভবত এটি একটি ভালো দিক। এসব থেকে দূরে থাকলে বাংলাদেশ ভালো করতে পারবে।’
‘সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে রাশিয়ার প্রতি অনেক বেশি উদারনীতি অনুসরণ করছেন ট্রাম্প। যে কারণে রুশ তহবিলের পরমাণু জ্বালানি প্রকল্প ও রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য (যুক্তরাষ্ট্র) বাংলাদেশকে ঝামেলায় ফেলবে বলে মনে হচ্ছে না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন গতি পেয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারে বড় শক্তিগুলো, যেমন: যুক্তরাষ্ট্র-চীন, ভারত-চীন ও যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার বহুমাত্রিক ও ব্যাপক প্রতিযোগিতা কিছুটা কমে এসেছে। বাংলাদেশে এই প্রতিযোগিতা ততটা জোরালো না-ও হতে পারে।’
‘কাজেই কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ যে একটা বাজে সংকটের মুখে পড়েছিল, তেমন কিছু না-ও ঘটতে পারে। তখন রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ চুল্লির যন্ত্রাংশবাহী জাহাজ বাংলাদেশে ভিড়তে না দিতে চাপ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।’