উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে ভারতের আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে আরও ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত রপ্তানির জন্য সরকারকে একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে।
বিদ্যুত বিভাগের একটি উচ্চপদস্থ সূত্র সম্প্রতি ইউএনবিকে জানিয়েছে, ‘এই বিদ্যুতের পুরোটি আসবে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে। এর মধ্যে ১ হাজার মেগাওয়াট সৌরশক্তি এবং বাকি ৬০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুত থেকে।’
বর্তমানে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে একচেটিয়াভাবে বাংলাদেশের জন্য নির্মিত গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ২৫ বছরের বিদ্যুত ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) অধীনে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত রপ্তানি করছে ভারতের জায়ান্ট আদানি গ্রুপ ।
খুব সম্প্রতি আদানি গ্রুপের কাছ থেকে নতুন প্রস্তাবটি এসেছে, যখন গ্রুপটির প্রধান গৌতম আদানি ঢাকা সফর করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
আরও পড়ুন: আদানি গ্রুপের সঙ্গে 'রাষ্ট্রবিরোধী' বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিলের দাবি ডা. জাফরুল্লাহর
সূত্রটি নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছিলেন, কারণ মিডিয়ার সঙ্গে তাদের কথা বলার অনুমতি নেই।
সূত্র জানিয়েছে যে প্রস্তাবিত জলবিদ্যুতের ৬০০ মেগাওয়াট নেপাল থেকে আসবে যেখানে আদানি গ্রুপ একটি প্ল্যান্ট স্থাপন করবে।
অন্যদিকে, প্রস্তাবিত ১ হাজার মেগাওয়াট সৌর শক্তি ভারত থেকে আসবে যেখানে আদানি এখন নবায়ণযোগ্য বিদ্যুত প্ল্যান্ট স্থাপন করছে।
উচ্চ পর্যায়ের আরেকটি সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে যে ‘আমরা শুনেছি আদানি গ্রুপকে তার প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে’।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে আদানি গ্রুপের প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার উদ্যোগটি ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুত উৎপাদনে নবায়নযোগ্য বিদ্যুত ৪০ শতাংশে উন্নীত করার সরকারের পরিকল্পনার অংশ। যখন দেশটি তার উৎপাদন ক্ষমতা ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৯ হাজার ৯৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও জানান, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত আমদানি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য উৎস থেকে এখন ১ হাজার ১৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করা হলেও জাতীয় গ্রিডে আসছে মাত্র ৮২৫ দশমিক ২৩ মেগাওয়াট।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৩০টি প্রকল্পের মাধ্যমে আরও ১ হাজার ২৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন প্রকল্পের কাজ চলছে এবং ৮ হাজার ৬৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: আদানি প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুত সঞ্চালন শুরু
গত সপ্তাহে বিদায়ী ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসন বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে নসরুল এ কথা বলেন।
দু’টি ডেনমার্কের নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংস্থার একটি যৌথ উদ্যোগ বঙ্গোপসাগরের উপকূলে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ৫০০ মেগাওয়াট প্রাথমিক ক্ষমতাসহ একটি বাণিজ্যিক, ইউটিলিটি-স্কেল অফশোর উইন্ড (উপকূলীয় বায়ু বিদ্যুত) প্রকল্প স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি বিনিয়োগ প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
প্রস্তাবটি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ডেডিকেটেড গ্রিনফিল্ড নবায়ণযোগ্য জ্বালানি বিনিয়োগকারী এবং নির্মাতা, কোপেনহেগেন ইনফ্রাস্ট্রাকচার পার্টনারস (সিআইপি) এবং কোপেনহেগেন অফশোর পার্টনারস (সিওপি) থেকে এসেছে।
আরও পড়ুন: শুল্ক সমস্যা অমীমাংসিত রেখেই বাংলাদেশে আদানির বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু