বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি উন্নয়নে চীনের ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদানকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
১২ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৬০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরী চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট কোঅপারেশন এজেন্সির মাধ্যমে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এর সুফল পাবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি (রিপ্রেজেন্টেটিভ) সুম্বুল রিজভী বলেন, ‘চীনের তরফ থেকে এই অনুদান এল এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, যখন চলমান রোহিঙ্গা সংকটটির সপ্তম বছর চলছে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক-এডিবির ঋণ নয়, অনুদান চাই: টিআইবি
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ হিসেবে চীন তার দায়িত্ব পালন করছে এবং বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা দিচ্ছে। আমরা ভবিষ্যতে ইউএনএইচসিআরের আরও কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার আশা রাখি। তবে এই সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হলো বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন।’
শরণার্থী নারী ও কিশোরীরা প্রতি বছর দুটি করে হাইজিন কিট পাচ্ছে। চীনের সহায়তায় আড়াই লাখের বেশি হাইজিন কিট রোহিঙ্গা নারীদের কাছে পৌঁছে দেবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও ইউএনএইচসিআর।
এই হাইজিন কিটগুলো সরবরাহ করতে ইউএনএইচসিআর ও চীন সরকার একসঙ্গে কাজ করবে। চীনের অনুদান নিশ্চিত করবে গোসলের ও কাপড় ধোয়ার সাবান ও বালতিসহ কিছু সামগ্রী। কক্সবাজারে শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্য থেকে দুইশোর বেশি নারী এসব হাইজিন কিটগুলোর বাকি জিনিসগুলো তৈরি করবেন। এর মাধ্যমে তারা তাদের দক্ষতাকে নিজ জনগোষ্ঠীর কাজে ব্যবহার করতে পারবেন এবং সীমিত পরিসরে জীবিকা নির্বাহের কাজে নিজেদের স্বনির্ভর করার একটি প্রয়াস পাবেন।
ইউএনএইচসিআর-এর রিপ্রেজেন্টেটিভ সুম্বুল রিজভী আরও বলেন, ‘শরণার্থী নারী যারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেন তারা এই কিটের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছেন। তাদের কাছে এটি অতি প্রয়োজনীয়, আর নিজ সমাজের নারীদের মাধ্যমে তৈরি এই সামগ্রীর গুণগত মান নিয়েও তারা সন্তুষ্ট।’ ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশে নারী ও বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য চলমান মানবিক কার্যক্রমে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তার জন্য চীন ও অন্যান্য দেশের মানবিক সাহায্য অত্যন্ত জরুরি। ৯ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ও ৪ লাখ ৯৫ হাজার স্থানীয় বাংলাদেশি মিলিয়ে মোট প্রায় ১৫ লাখ মানুষের সহায়তার জন্য প্রায় ৮৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আবেদন করেছিল মানবিক সংস্থাগুলো। ডিসেম্বরের শুরুর সময় পর্যন্ত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানটি (যৌথ কর্ম পরিকল্পনা) প্রায় ৫০ শতাংশ তহবিল পেয়েছে।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় রোহিঙ্গা যুবককে গুলি করে হত্যা
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত: টিআইবি জরিপ