বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগে কালো টাকা বৈধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘নামমাত্র পরিমাণ অর্থ (ট্যাক্স) দিয়ে প্রথমে যথাযথ জায়গায় (ব্যাংকিং চ্যানেলে) টাকা আসতে দিতে হবে এবং তারপর নিয়মিত কর দিতে হবে। মাছ ধরতে গেলে আগে টোপ দিতে হবে।’
শুক্রবার (৭ জুন) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে কালো টাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং যুক্তি দিয়েছেন যে এটি আইনি করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে।
তিনি বলেন, এটা ঠিক নয়, বরং আসল কথা হলো সবকিছুর দাম বেড়েছে এবং এক কাঠা জমির মালিক কোটিপতি। কিন্তু কেউই সরকারি দামে জমি বিক্রি করে না বরং বেশি দামে বিক্রি করছে। তাই জমি বিক্রি করে পাওয়া বাড়তি টাকা ব্যাংকে রাখে না।
আরও পড়ুন: যেসব দেশ উন্নয়নে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে কাজ করবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে সর্বশেষ বাজেট ছিল ৬২ হাজার কোটি টাকা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকা, অথচ তার সরকার এবার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বাজেটে কিছু মৌলিক দাবির ওপর আলোকপাত করা হয়েছে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও স্থানীয় শিল্প এবং সামাজিক নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
বিশ্বব্যাপী উচ্চ মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমিত আয়ের মানুষ মূল্যস্ফীতির কারণে কষ্ট পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সীমিত আয়ের মানুষের জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু করেছি, যাতে চাল, ডাল, ভোজ্যতেলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারে। যারা হতদরিদ্র তাদের আমরা খাবার পৌঁছে দিচ্ছি।'
এছাড়া সরকার ১৫০টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় জনগণকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান এবং কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে প্রায় ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণত প্রতি বর্ষা মৌসুমে পণ্যের দাম বেশি থাকে। এটা মাথায় রেখেই আমরা ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু করব।'
তিনি আরও বলেন, 'এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা, বিশেষ করে খাদ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ানোর জন্য এটি প্রয়োজন।’
বাজেট ঘাটতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ঘাটতি রাখা হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশে, এমনকি উন্নত দেশগুলোতেও বাজেট ঘাটতি এর চেয়ে বেশি।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির মধ্যে দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে একটি জমিও অনাবাদি না রাখার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সরকার শিশুদের মেধা বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করেছে : প্রধানমন্ত্রী