প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমার সরকার বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতা এবং মহামারির কারণে সৃষ্ট মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে বাজেটে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।’
বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনে সংসদ নেতা হিসেবে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও সরকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার এত বড় বাজেট দিতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রী এবং বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত অন্য সকলকে তার আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘অনেকেই ভাবতে পারেনি যে আমরা এটি (বাজেট) উত্থাপন করতে পারব, তবে আমরা এটি করতে পেরেছি।’
এটি মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম জাতীয় বাজেট এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে প্রদত্ত চতুর্থ বাজেট, তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেটের কয়েকটি কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা দরকার: ড. আতিউর
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের সর্বাত্মক সমর্থনে আমরা ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ ও করোনাভাইরাস মহামারির বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হবে এবং তা করতে সক্ষম হবে। আমরা দেশে-বিদেশে শত বাধা অতিক্রম করে অসম্ভবকে সম্ভব করছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতার কারণে অনেক উন্নত দেশ যখন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তখন বাংলাদেশ সফলভাবে তার অর্থনৈতিক অগ্রগতি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার মূল কৌশল হবে- পণ্যের সরবরাহ বাড়ানো এবং চাহিদার বিদ্যমান প্রবৃদ্ধি হ্রাস করা। মূল্যস্ফীতি কমানোই আমাদের বড় লক্ষ্য।
তিনি বলেন, এই সপ্তাহে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ায় পণ্যের সরবরাহ অনেকাংশে সহজ হচ্ছে এবং যোগাযোগ নেটওয়ার্কে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের কারণে মুদ্রাস্ফীতির হার কমাতেও সাহায্য করবে।
সরকার বিলাস দ্রব্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের এমন জিনিসপত্র যা খুব বেশি প্রয়োজনীয় নয়, সেগুলো আমদানি বন্ধ করার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেছেন, আমদানি পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমাতে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
এই প্রেক্ষাপটে তিনি সকলকে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য ও সেবা গ্রহণের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্রে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ২ বছর পিছিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী