ঢাকায় ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভিসা কেন্দ্রের অভ্যন্তরে আকস্মিক বিক্ষোভের জেরে এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন।
হাইকমিশনের এক ভারতীয় কর্মকর্তা সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। আমরা কূটনৈতিক নোট পাঠিয়েছি। আমাদের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। আমাদের জন্য এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়া উচিত নয়।’
আজকের ঘটনায় তারা কোনোভাবে আস্থাশীল নয় উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, তারা মূলত জনগণের অনুরোধে পাসপোর্ট ফেরত দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি হঠাৎ করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং লোকজনকে 'হুমকি দেওয়া হয় এবং আতঙ্কিত'।
ভারতীয় ভিসার দাবিতে হঠাৎ করেই ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে (আইভিএসি) বিক্ষোভ করেছেন ভিসাপ্রত্যাশীরা।
ভারতীয় হাইকমিশনের ওই কর্মকর্তা জানান, তারা তাদের আবেদনপত্র ঠিক রেখে সব পাসপোর্ট ফেরত দিচ্ছেন, যাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এলে আবেদনকারীরা আবার তাদের পাসপোর্ট জমা দিতে পারেন।
জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু অনেকে পাসপোর্ট ফেরত চাইছেন, তাই তাদের আবেদন বাতিল না করেই আমরা পাসপোর্ট ফেরত দিচ্ছি।’
মেডিক্যাল ভিসার যেসকল আবেদন এখনো নিষ্পত্তি হয়নি ভারতীয় হাইকমিশন ইতোমধ্যেই সেগুলোর ছাড়পত্র দিয়েছে।
কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, বেলা ১১টা থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ ভিসা প্রত্যাশী ওই কেন্দ্রে ভিড় করলেও কোনো ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। বিকাল ৩টার দিকে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তাৎক্ষণিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল যেখানে লোকজনকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
‘ভারতীয় দালালেরা, সাবধান ... এক দফা, এক দাবি- আমরা ভিসা চাই,’ স্লোগান দিতে শোনা যায় তাদের।
ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র (আইভিএসি) বাংলাদেশ এর আগে জানিয়েছিল, সীমিত কার্যক্রমের কারণে ভিসা প্রক্রিয়ায় বেশি সময় লাগতে পারে। ‘তাই আমরা এখন পাসপোর্ট ফেরত দিচ্ছি এবং কার্যক্রম পুনরায় শুরু হলে এটি পুনরায় প্রক্রিয়া করা হবে। আবেদনকারীকে এসএমএসের মাধ্যমে তার পাসপোর্ট পুনরায় জমা দেওয়ার জন্য অবহিত করা হবে।’
বাংলাদেশে ভারতের সবচেয়ে বড় ভিসা কার্যক্রম রয়েছে এবং গত বছর ১৬ লাখ মানুষ ভারত ভ্রমণ করেছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ পর্যটন উদ্দেশ্যে, ৩০ শতাংশ চিকিৎসার উদ্দেশ্যে এবং ১০ শতাংশ অন্যান্য উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করেন।
এর আগে গত ২২ আগস্ট ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশে ভারতীয় স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে হাইকমিশনার ভার্মা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।