মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ভাসানচর অনেক উন্নত সুবিধাসহ বসবাসের জন্য একটি খুব স্থিতিশীল স্থান। পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থাসহ এখানটা অনেক সুরক্ষিত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টাকা বা ঘুষ দিয়ে সেখানে কাউকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। এরকম কোনো কিছু হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, আমাদের মধ্যে এমন চর্চা নেই।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর জোরপূর্বক নয়: ঢাকা
তিনি বলেন, তারা তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে এসব নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে যারা ভাসানচরে গিয়েছেন তারা সেখানে খুব আনন্দে আছে। আমরা দেখলাম ভাসানচরে চারজন রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বেশ কয়েকটি দেশ রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরিত করার সরকারি উদ্যোগকে আনুষ্ঠানিকভাবে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন করেছে। বিষয়গুলো আরও ভালো হচ্ছে। আশা করি অন্যরাও তা বুঝতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় গাড়ি বহর চট্টগ্রামে
তিনি বলেন, ভাসানচরে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাগুলো দেখাতে ঢাকায় থাকা বিদেশি রাষ্ট্রদূত এবং বিদেশি গণমাধ্যমের কর্মীদের ভাসানচরে নিয়ে যাবে সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এতে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়ার পর অসংখ্য সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসনচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ। পরিকল্পনা অনুসারে, কক্সবাজার থেকে প্রথম দফায় গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ এবং দ্বিতীয় দফায় গত ২৯ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা স্থানান্তরকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা না করতে ঢাকার আহ্বান
সরকার এ প্রক্রিয়াকে ‘দ্ব্যর্থহীনভাবে পরিষ্কার’ করেছে যে কক্সবাজারের জনাকীর্ণ শিবিরগুলোতে চাপ কমানো ও ঝুঁকি হ্রাস করতে সরকারের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ স্থানান্তর প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে পরিচালিত ও স্বেচ্ছায় যেতে রাজি হওয়ার নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে যারা যাচ্ছেন তাদের এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বল প্রয়োগ, ভয় দেখানো বা অর্থের ব্যবহারের কোনো প্রশ্নই আসে না।
গণমাধ্যম, সুশিল সমাজ ও এনজিওকর্মীদের উপস্থিতিতে রোহিঙ্গারা ভাসানচর গেছেন। তাদের কেউ জবরদস্তি বা বল প্রয়োগের প্রশ্ন তোলেনি। বরং সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, তাদের প্রতিনিধি ও স্বজনদের কাছ থেকে ভাসানচর সম্পর্কে ইতিবাচক কথা শুনেই তারা উৎসাহিত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে উদ্বেগের কিছু নেই, জাতিসংঘকে জানাল বাংলাদেশ
সরকার জোর দিয়ে বলছে, দ্বীপটিতে বসবাসের উপযোগী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
মন্ত্রণালয় বলছে, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা ভাসানচর দ্বীপটি ৩০ বছরের পুরানো এবং নিরাপদ। ভাসানচরে স্বাস্থ্যসেবা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ এবং ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে।
দ্বীপটিতে রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এরই মধ্যে ভাসানচর ও নোয়াখালীর মধ্যে নিয়মিত সমুদ্র-ট্রাক সেবা চালু করেছে।
আরও পড়ুন: 'আলহামদুলিল্লাহ, ভাসানচরের সুযোগ-সুবিধায় সন্তুষ্ট’: এক রোহিঙ্গার অনুভূতি