প্রায় ১০ বছর আগে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ভুজপুরে বিএনপি-জামায়াতের হরতালের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিছিলে হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় করা এক মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ওই মামলার কয়েকজন আসামির করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা এবং বিচারপতি খোন্দকার খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আবেদন খারিজ করে দেন।
ফলে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে চলতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।
২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ভুজপুরে বিএনপি জামায়াতের হরতালের ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আয়োজিত আওয়ামী লীগের মিছিলে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: রিতা দেওয়ানের মামলা হাইকোর্টে স্থগিত
সেদিন দেড় শতাধিক মোটরসাইকেল, ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি, পাঁচটি মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার, তিনটি পিকআপ ও চারটি চাঁদের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলায় আহত হন আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মী। হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগের তিন নেতাকর্মীকে।
তারা হলেন- ফারুক ইকবাল বিপুল (৩৯), মো. রুবেল (২২) ও ফোরকান উদ্দিন (২৭)।
ওই ঘটনায় ভুজপুর থানায় পাঁচটি মামলা করা হয়। মামলায় আসামি করা হয় ১৬ হাজার ৪৭১ জনকে। এর মধ্যে ৪৭১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। বাকিরা অজ্ঞাতপরিচয় আসামি। মামলায় আসামিদের মধ্যে ছিলেন ভুজপুর থানা জামায়াতের সাবেক আমির শফিউল আলম নুরী ও ফটিকছড়ি উপজেলা জামায়াতের আমির হাবিব আহমেদ।
এ পাঁচ মামলার মধ্যে এক মামলায় ২০১৫ সালের ৩০ জুন জামায়াতের সাবেক আমির শফিউল আলম নুরীকে প্রধান আসামি করে ২৭৮ জনের অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
পরে চট্টগ্রামের দায়রা জজ আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর বিচারের জন্য মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠায়।
দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল আইনের ১০ ধারা অনুযায়ী ওই ট্রাইব্যুনাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়ায় আসামি শফিউল আলম নুরী সহ আরও কয়েকজন আসামি মামলাটি পুনরায় দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর আবেদন করেন।
সে আবেদন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল খারিজ করেন। দ্রুত বিচার আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে শফিউল আলম নুরীসহ কয়েক আসামি হাইকোর্টে বিরিভিশন মামলা দায়ের করেন। আবেদনে রুল জারির আর্জি জানিয়ে মামলার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া জানান, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১৩৫ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে পারে নাই বলে মামলাটি আগের আদালতে ফেরত পাঠাতে আবেদন করা হয়েছিল। সে আবেদন খারিজের পর আসামিরা হাইকোর্টে রিভিশন করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট আসামি পক্ষের আবেদন সরাসরি খারিজ করেন। ফলে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটির বিচার চলতে কোন বাধা নেই।
আরও পড়ুন: বিচারকের বিরুদ্ধে অশ্লীল স্লোগান: ২১ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
তাকসিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে দুদককে পদক্ষেপ জানাতে বলেছেন হাইকোর্ট