স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ নাই। এছাড়া বিষাক্ত ওষুধ মেশানো ভেজাল খাদ্য দিয়ে দেশ ভরে গেছে।
তিনি বলেন, যে খাবারগুলোই আমরা খাচ্ছি তার সবই প্রায় ভেজাল মেশানো। চাল, ডাল, মশলা, মাছ থেকে শুরু করে শাকসবজি সহ প্রায় সব খাদ্যেই বিষ মেশানো হচ্ছে। সেই বিষ মেশানো খাবারগুলো আমরা নিজেরা খাচ্ছি, আমাদের পরিবারের ছোট-বড় সবাই খাচ্ছে। ভেজাল খাদ্যের কারণে মানুষের দেহে ক্যান্সার, কিডনী সহ বড় বড় জটিল রোগগুলো এখন দ্বিগুণ হারে বেড়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধিতে করণীয় বিষয়ে একটি মত বিনিময় সভায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: মন্ত্রণালয় ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিতে পারবে কিন্তু মশা মারতে পারবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ভেজাল খাবারের কারণেই দেশে ওষুধের ব্যবসা এত বেড়ে গেছে, হাসপাতালে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি হাসপাতালের ফ্লোরেও রোগীদের এখন জায়গা হয়না। উন্নত দেশগুলোতে আর যাই হোক খাদ্যে বিষ মেশালে সেই কোম্পানি যত ক্ষমতাধরই হোক কোনো ছাড় দেয়া হয়না। আমাদের দেশে এখন হোটেলে ভেজাল খাবার, দোকানে ভেজাল খাবার, বাজারে ভেজাল খাবারসহ সর্বোত্র ভেজাল খাবার দেয়া হচ্ছে। মানুষ যাবে কোথায়? খাবে কী?
এভাবে তো চলতে দেয়া যায়না।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুস্থ জীবন দিতে হলে এই ভেজাল কারবারিদের এখনই থামিয়ে দিতে হবে। খাদ্যে ভেজাল দেয়া বন্ধ করতে হবে। এটি করতে আমাদের স্বাস্থ্যখাতের ভুমিকা আরও জোড়ালো করার পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে এবং একযোগে কাজ করতে হবে। ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধ কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সেটি নিয়ে পড়ে থাকলে এই ভেজাল আর বন্ধ হবে না। ভেজাল প্রতিরোধ করা ও নিয়ন্ত্রণ করা অন্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হতে পারে, কিন্তু চিকিৎসা'তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেই দিতে হবে। কাজেই আগামী এক মাসের মধ্যেই স্বাস্থ্যখাতের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কিছু টিম গঠন করে মাঠে নেমে যেতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সেই রিপোর্ট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে আমরা বসে খুব দ্রুত এর সমাধান করব।
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী একে একে উপস্থিত সবার কথা শোনেন, এবং সবাইকে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কি কি ভুমিকা রাখতে হবে সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেন।
এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম সাদিসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরের পদস্ত কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গু শনাক্তের হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী