সরকার কর্তৃক ঘোষিত এলাকাভিত্তিক পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের প্রথম দিন দেশে মোট ১৯১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টায় রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) জনসংযোগ বিভাগের সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পরিচালক শামীম হাসান বলেন, ‘আমরা ১৪ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে মোট ১২ হাজার ৪৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ব্যবধান মেটাতে এক হাজার ৯১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়।
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো দেশে জ্বালানি সংকট এড়াতে বিদ্যুতের রেশনিংয়ের আশ্রয় নেয়।
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার একজন বাসিন্দা জানান, সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত তারা এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হন।
অন্যদিকে নিকেতনের আরেক বাসিন্দা জানান, তাদের এলাকায় সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না।
একটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির নির্বাহী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, বনানীতে তাদের অফিস দুপুর ১২টা থেকে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়: মঙ্গলবার থেকে দেশে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী দৈনিক দুই ঘণ্টা এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং কার্যকর করার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সংশোধিত সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে, পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে দৈনিক এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টার লোডশেডিং দেয়া হবে। এক সপ্তাহ পর প্রয়োজনে আমরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবো।’
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভিন্ন বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড তাদের এলাকাভিত্তিক বিভ্রাটের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে।
এছাড়া সরকার রাত ৮টার মধ্যে শপিংমল ও বাজার বন্ধ করার এবং এয়ার কন্ডিশনার সীমিত ব্যবহার সহ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা
এবং অফিসের সময়সীমা সীমিত করার এবং প্রতি সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার পরিকল্পনা চলছে।
তবে কিছু এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের বাইরেও তাদের ঘন ঘন বিভ্রাটের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
রাজধানীর রামপুরা এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহমান জাহাঙ্গীর জানান, তার এলাকায় দিনভর কয়েকবার বিদ্যুৎ বিঘ্নিত হয়েছে।
আরও কয়েকটি এলাকা থেকেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান,’১০-১৫ মিনিটের বিভ্রাটগুলো সরকারের ঘোষিত পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের অংশ নয়৷ দুর্বল বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাপনার কারণে এটি ঘটতে পারে।’
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে সরকার অফিসের সময় পরিবর্তনের কথা ভাবছে: জ্বালানি উপদেষ্টা