তিনি বলেন, ‘ইদানীং আমাদের করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যদি মাস্ক না পরি, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখি, সংক্রমণ তো বাড়বেই। তারপর আবার মানুষ যেভাবে কক্সবাজার যাচ্ছে, সিলেটে যাচ্ছে, যেভাবে সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে, মাস্ক পরার বালাই নেই, সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই, সংক্রমণ তো বাড়বেই।’
রাজধানীর চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আমাদের আবারও সজাগ হতে হবে। করোনা চলে যায়নি। করোনা যখন যাবে তখন আমরা সবাই জানবো। শুধু বাংলাদেশ না, গোটা পৃথিবী থেকে দূর হলে বাংলাদেশ নিরাপদ হবে।
‘কাজেই এক ডোজ টিকা নিয়েই ভাবা উচিত না যে করোনামুক্ত। টিকা নিলেই করোনামুক্ত হবে না। দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর সময় লাগবে সুরক্ষা তৈরি হতে। দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার আগে করোনা থেকে সুরক্ষা তৈরি হবে না,’ বলেন তিনি।
সারা দেশে করোনা মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি আছে, অনুষ্ঠানসহ সামাজিক কার্যক্রম সীমিত পরিসরে করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে টিকার আওতায় আনতে কাজ করছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। সিরাম থেকে ক্রয়কৃত টিকার তৃতীয় চালান আসবে চলতি মাসেই। এছাড়াও জুনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে কোভ্যাক্সের ১ কোটি ৯ লাখ ডোজ আসার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ২৬.১৯ লাখ ছাড়াল
করোনাভাইরাসের টিকা নিলেন রাষ্ট্রপতি
মন্ত্রী বলেন, টিকার জন্য ৫৩ লাখেরও বেশি নিবন্ধন হয়েছে। ৪১ লাখেরও বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। টিকার দুটি ডোজ দেয়া হয় একজনকে। সে হিসাবে ২ কোটি ডোজ দিয়ে ১ কোটি মানুষকে টিকা দেয়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, যত মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে প্রত্যেকে সুস্থ আছেন। কোনো জায়গায় কোনো অঘটন ঘটেনি। সরকার এখন যে টিকা দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে যা দেবে, তা পুরোটাই বিনামূল্যে থাকবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ৩০ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি রয়েছে এর আগেই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীও শিক্ষকদের টিকা দেয়া হবে।
বয়সসীমা ৪০ নির্ধারণ করার কারণে দেশের ৪ কোটি লোককে টিকা দিতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যেভাবে ভ্যাক্সিনেশন হচ্ছে, এ পর্যন্ত ভালোই আছে। এই ভালোটা বজায় রাখতে চাই। টিকা যদি আমাদের হাতে বেশি আসে, সব শিডিউল ঠিক থাকে, তাহলে হয়তো বয়সের বিষয়ে চিন্তা করতে পারব।’
এদিকে দেশে ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে শনাক্ত আরও বেড়েছে বলে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে আট হাজার ৫০২ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫১ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৫৪ হাজার ১৫৬ জনে পৌঁছেছে।
এর আগে বুধবার ২৪ ঘণ্টায় সাতজনের মৃত্যু এবং ১ হাজার ১৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানায় অধিদপ্তর।
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৯টি পরীক্ষাগারে ১৮ হাজার ১৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ পরীক্ষা করা হয় ১৮ হাজার ৫৮টি নমুনা।
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৫.৮২ শতাংশ। আগেরদিন শনাক্তের হার ছির ৫.৯৮ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ডিএমপি কমিশনার করোনায় আক্রান্ত
কোভিড ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপ দরকার: ডব্লিউএইচও