বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মিরপুরে দুজনকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে আরও দুইটি মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান খুনের পৃথক দুটি অভিযোগ এজাহার হিসেবে রেকর্ড করতে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
এই দুটিসহ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৭টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি খুনের মামলা এবং একটি অপহরণ মামলা।
গত ৪ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে নবম শ্রেণির ছাত্র লিটন হাসানকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের বড় ভাই মো. মিলন।
আরও পড়ুন: রংপুরে শিক্ষার্থী হত্যা: শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে মামলা
বাদীর আইনজীবী ইলতুৎমিশ সওদাগর বলেন, ‘৪ আগস্ট মিরপুর গোলচত্বরে আন্দোলনের সময় তাকে গুলি করা হয়। আগারগাঁও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগষ্ট মারা যায় লিটন।’
মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান (নিখিল), ইলিয়াস মোল্লা, কামাল আহমেদ মজুমদার, আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব এস এম মান্নান (কচি) সহ আরও অনেকে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, দেশে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে হাসান ৪ আগস্ট মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। দুপুর ২টার দিকে উল্লেখিত আসামিদের নির্দেশে অন্যান্য আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ২০০/৩০০ জন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি করে।
অন্যদিক মিরপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি আবদুল্লাহ কবিরকে হত্যার অভিযোগের শেখ হাসিনাসহ ৬৭ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী আফসানা আক্তার।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট দুপুরে মিরপুর ১০ গোলচত্বরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করছিলেন বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ কবির। শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালায়। এতে ১০ নম্বর গোলচত্বরের কাছে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে অবস্থান করা আবদুল্লাহ কবিরের বুকে গুলি লাগে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, কামাল আহমেদ মজুমদার, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদসহ ১০৮ জনের নামে মামলা
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’য় ইউরোপিয়ান আ. লীগের প্রতিবাদ