মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য বুধবার(১৭ জানুয়ারি) সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, 'কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অগ্রাধিকার হচ্ছে যেকোনো মূল্যে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি রোধে আরেকটি পদক্ষেপের জন্য আমরা ব্যাংকের বাইরে মুদ্রা প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের নীতি নির্ধারণ করেছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি মালিকানাধীন শিপিং এবং এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে: বিবি
আর্থিক খাতে চলমান চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় বাংলাদেশ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস প্রাথমিক ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ করেছে।
মুদ্রানীতির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভোক্তা মূল্য ক্রমাগত উচ্চমাত্রায় থাকায় কর্তৃপক্ষ মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাস ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করেছে।
গভর্নর বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক জুনের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি সাড়ে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায়। এ জন্য নতুন মুদ্রানীতিতে সুদের হার ২৫ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শুক্র-শনিবার খোলা থাকবে ব্যাংক: বিবি
তিনি বলেন, অর্থ সরবরাহ রোধে আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে জুন মাসে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী সুদের হার ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হচ্ছে।
এর ফলে অন্য ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ অর্থ ঋণ নেবে, তার সুদের হার বাড়বে।
এছাড়া রিভার্স রেপো রেট (বর্তমানে স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি বা এসডিএফ নামে পরিচিত) ন্যূনতম সুদের হার ৭৫ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ করার ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজারে উদ্বৃত্ত টাকা থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিভার্স রেপোর মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে।
আরও পড়ুন: চিংড়ি-মাছ রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দিতে বিবি’র নতুন নীতিমালা জারি
পলিসি ইন্টারেস্ট করিডোরে স্পেশাল রেপো বা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) সুদের হারের সীমা ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকটের সময় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার খরচ কমবে।
চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (ডিসেম্বর পর্যন্ত) ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির মতো ঋণ প্রবৃদ্ধির এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। আর গত নভেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ শতাংশ কম।