রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মার্কেটিং ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় উভয় পক্ষের ১০ শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকটি কক্ষও ভাঙচুর করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় এ ঘটনা ঘটে। আইন বিভাগ ও মার্কেটিং বিভাগের মধ্যে আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলায় উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমান এবং ওই দুই বিভাগের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।
এছাড়া দায়িত্ব পালনকালে এক সাংবাদিককে মারধর ও ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটেছে। দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমি ভবনের দুই পাশে অবস্থান নেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাবিতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে রাউন্ড-১৬ এ মার্কেটিং বিভাগ ও আইন বিভাগের খেলা হয়। এতে মার্কেটিং বিভাগ ১ গোলে বিজয়ী হয়। খেলা চলাকালে উভয় পক্ষের দর্শক স্টেডিয়ামে অবস্থান করছিলেন। গোল হওয়ার এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ একে-অপরকে ‘ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করলে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
খেলা শেষে আইন বিভাগ আগে স্টেডিয়াম ত্যাগ করে। পরে মার্কেটিং বিভাগ বের হয়। কিন্তু স্টেডিয়াম গেটে ফের উভয় পক্ষের কিছু শিক্ষার্থী বাকবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি হয় এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
এ সময় ইটের আঘাতে আইন বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুর রহমান এবং ওই বিভাগের তানজিল ও তোফায়েলসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহত অন্যদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এছাড়া দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক বণিকবার্তা পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিবেদক আবু সালেহ শোয়েবের ওপর আক্রমণ করেন এবং তার ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করেন মার্কেটিং বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী।
আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাঈদা আঞ্জু বলেন, ‘আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজে আছি। আমাদের শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।’
আহত সাংবাদিক আবু সালেহ শোয়েব বলেন, ‘আমিসহ কয়েকজন সাংবাদিক প্রেস ক্লাবের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিছিল শোডাউন নিয়ে ফার্স্ট সায়েন্স বিল্ডিং পার হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের হাতে লাঠিসোটা দেখে ভিডিও করার জন্য ফোন বের করে ভিডিও করি। এ সময় ওই বিভাগের আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী আমার দিকে ধেয়ে এসে মারধর শুরু করেন। আমি সাংবাদিক পরিচয়ে আইডি কার্ড দেখালে সেটি ছিঁড়ে ফেলেন। আমার কলার চেপে ধরে ফোন থেকে জোর করে ভিডিও ডিলিট করানো হয়। আমার সঙ্গে প্রেস ক্লাবের সভাপতিসহ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।’
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারে রাবি শিক্ষকদের বাধা