পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আরএনপিপি) প্রকল্পের প্রধান রাশিয়ান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রোসেম জানিয়েছে, সম্প্রতি পাঁচ রুশ কর্মীর মৃত্যুর তদন্তে তারা বাংলাদেশ পুলিশকে সমস্ত ‘ সাহায্য ও সহযোগিতা’ করবে।
মঙ্গলবার ইউএনবিতে প্রকাশিত গত দুই সপ্তাহে পারমাণবিক প্ল্যান্ট পাঁচ রুশ কর্মীর মৃত্যুর প্রতিবেদনের ফলে পুলিশের তদন্তে গতিশীলতা এসেছে।
এক বিবৃতিতে জেএসসি এটমোসট্রয়এক্সপোর্ট (রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় কর্পোরেশন রোসেমের প্রকৌশল বিভাগ) বলেছে যে প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে নিহত রুশ কর্মীদের মৃত্যুতে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।
কোম্পানি বলেছে, ‘বর্তমানে আমরা প্রতিটি মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করার জন্য অনুসন্ধান চালানো দলকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা করছি।’
এর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ‘চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, আমাদের দেশি ও বিদেশি অংশীদার, স্টেকহোল্ডার, স্বাস্থ্যসেবাকারী এবং প্রশাসনের সহায়তায় আমরা ভবিষ্যতে এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
সংস্থাটি কর্মীদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে এবং মৃত কর্মীদের পরিবারের প্রতি ‘গভীর সহানুভূতি’ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: ১১ দিনে ৫ রুশ নাগরিকের মৃত্যু, তদন্ত করছে পুলিশ
তারা বলেছে, ‘আমরা সবসময় আমাদের কর্মীদের প্রতিষ্ঠানের সম্পদ হিসাবে বিবেচনা করি এবং তাদের জীবন ও সুস্থতা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মী বারসেনকো আলেক্সি (৪৮) ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আর শাকিরফ আলেক্সি (৪০) নামের আরেক কর্মী গত ২ ফেব্রুয়ারি ঘুমের মধ্যে মারা যান।
এর তিনদিন পর প্রকল্পের এক সাব-কন্ট্রাক্টর ফার্ম ট্রেস্ট রোসেমের মেকানিকেল ইঞ্জিনিয়ার শুকিন পাভেল (৪৮) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে একই উপজেলা মেডিকেলে মারা যান।
একই দিনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রাশিয়ান কর্মকর্তাদের জন্য গ্রীন সিটি আবাসন প্রকল্পের একটি টাওয়ারে তার ১৪ তলার ফ্ল্যাটের সিঁড়িতে অন্য একটি সাব-কন্ট্রাক্টর ফার্মের কর্মচারী টলমাসফ ভ্যাসিলিভ (৫৯) মারা যান।
সর্বশেষ গত ৬ জানুয়ারি প্ল্যান্টের নিকিম অ্যাটমস্ট্রোয়া ফার্মের ৪৫ বছর বয়সী কর্মচারী ভোর্টনিকভ আলেকজান্ডারকে একই আবাসিক কমপ্লেক্সে তার ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, নিহত রাশিয়ান নাগরিকদের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘সন্দেহজনক কিছু দেখা যায়নি’।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২ রুশ কর্মচারীর মৃত্যু