অ্যান্ড্রোজ বলেন, ‘এটি ব্যর্থ হয়েছে কারণ রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভূমি রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরির অর্থবহ পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমার অনিচ্ছুক রয়ে গেছে।’
‘এবং বাংলাদেশকে তাদের মানবিক মিশন চালিয়ে যেতে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকরণ দিতে না পারায় এটি ব্যর্থ হয়েছে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকটে নজর রাখা চান সুইডিশ ও ডাচ রাষ্ট্রদূত
তিন বছরের অধিক সময় পরেও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিজ ঘরে ফেরার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করতে না পারার এ ব্যর্থতা রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশ সরকার উভয়ের জন্য অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে জাতিসংঘের এ মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই সহায়তা, পদক্ষেপ এবং জবাবদিহি দিতে হবে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের ঘরে ফেরার মৌলিক অধিকারকে সমর্থন করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি ছিল সম্মিলিত প্রচেষ্টাতে জড়িত হওয়া, বলেন তিনি।
তার মতে, এসব কাজ করা যেত- রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার বিরাট বোঝা বহনে বাংলাদেশকে বৃহত্তর আর্থিক সহায়তা প্রদান করে; রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদার সাথে ফিরে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি করতে মিয়ানমার সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে; নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদার সাথে প্রত্যাবাসন অর্জনের জন্য কারিগরি সহায়তা দিয়ে এবং প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার সরকার অবশ্যই মানতে বাধ্য হয় তেমন স্পষ্ট, বাধ্যতামূলক ও সময়ে আবদ্ধ শর্ত আরোপ করে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের উচিত ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সাহায্য করা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
‘আমরা মানবিক সহায়তার জন্য বাংলাদেশকে শুধু ধন্যবাদ এবং রোহিঙ্গাদের ফেরার অধিকার বিষয়ে শুধু মুখের কথা আর অবশ্যই বলতে পারি না,’ বলেন তিনি।
ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের নিরাপদে বসবাসের জন্য ভাসানচর উপযোগী কি না তা জাতিসংঘের স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করা ছাড়াই সেখানে ১ হাজার ৬৪২ শরণার্থীকে স্থানান্তর করার ঘটনায় উদ্বেগও প্রকাশ করেন বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রোজ।
তিনি ভাসানচর নিয়ে জাতিসংঘ প্রস্তাবিত মূল্যায়নের ফল আসার পর এবং রোহিঙ্গারা সেখানে নিজেদের ইচ্ছায় যে যেতে আগ্রাহী তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বাধীন পদ্ধতিতে নিশ্চিত হওয়ার পর উদ্বাস্তুদের সেখানে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এসব নিশ্চিতকরণ ও মূল্যায়ন সবার ভালোর জন্যই করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে উদ্বেগের কিছু নেই, জাতিসংঘকে জানাল বাংলাদেশ
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের প্রয়োজনের সময়ে নিরাপদ আশ্রয় দিতে বাংলাদেশ সরকার অসাধারণভাবে উদারতা এবং মমতার পরিচয় দিয়েছে।
‘কিন্তু ভুল করলে চলবে না যে রোহিঙ্গা সংকট উদ্ভূত হয়েছে মিয়ানমার থেকে এবং সমাধান করা যাবে শুধুমাত্র মিয়ানমারে,’ বলেন বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রোজ।