রাখাইন রাজ্য
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মোখায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ
ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এসব ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য সাহায্য আবারও কমলো, বাংলাদেশে জরুরি অর্থায়নে জাতিসংঘের আহ্বান
এতে আরও বলা হয়,ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে শুকনো খাদ্য, তাঁবু, ঔষধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ মোট ১২০ টন ত্রাণ সামগ্রী।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজে শুক্রবার (০২ জুন ২০২৩) চট্টগ্রাম থেকে ইয়াংগুনের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে। জাহাজটি আগামী ০৫ জুন ২০২৩ তারিখে ইয়াংগুন বন্দরে পৌঁছাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের জন্য এই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অতীতে ২০১৫ সালে বন্যা এবং ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘নার্গিস’ পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশ মিয়ানমারের জনগণের জন্য জীবন রক্ষাকারী ত্রাণসামগ্রী প্রেরণ করেছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে আসছে। এছাড়া বিশ্বব্যাপী কোভিড অতিমারী এবং সিরিয়া, তুরস্ক ও আফগানিস্তানে সংঘটিত ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় বাংলাদেশ ত্রাণ সামগ্রী এবং চিকিৎসক দল প্রেরণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ হতে এসব মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে এবং বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
আরও পড়ুন: কৌশলগত অংশীদারিত্বে বাংলাদেশের সঙ্গে বৃহত্তর সম্পর্ক গড়তে চায় জাপান: রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি
১ বছর আগে
রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন করেছে প্রতিনিধি দল, রোহিঙ্গাদের দাবি নাগরিকত্ব
রোহিঙ্গাদের ২০ সদস্যসহ ২৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল শুক্রবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে বাংলাদেশে ফিরেছেন।
প্রতিনিধি দল ফিরে আসার পর কক্সবাজারের টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটে ব্রিফিংয়ে দুই রোহিঙ্গা নেতা বক্তব্য দেন।
এরপর প্রতিনিধি দলের প্রধান শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার বাংলাদেশের কাছে একমাত্র সমাধান হচ্ছে প্রত্যাবাসন। সে নিরিখে মিয়ানমারের কাছে বাংলাদেশের প্রস্তাব ছিল- যারা প্রত্যাবাসিত হবে সে সকল রোহিঙ্গাদের যাতে তাদের অ্যারেঞ্জমেন্ট দেখানো হয়। সে নিরিখে আমরা এটির নাম দিয়েছিলাম ‘গো অ্যান্ড ভিজিট’।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমার প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। আমরা ২০ জন রোহিঙ্গা নিয়ে মিয়ানমারের মংডুর আশেপাশে যেখানে তাদের জন্য যেসব অ্যারেঞ্জমেন্ট করা হয়েছে সেগুলো ঘুরে দেখার পর আজকে আমরা ফেরত আসলাম। প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছা দেখেছি। আমরা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাই।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির 'নীরব সাক্ষী' জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ: রাষ্ট্রদূত মুহিত
কমিশনার বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরাও ছিলেন। মূলত তাদের জন্যই এই আয়োজন। তারা প্রত্যাবাসিত হবে, তাদেরকে স্বচক্ষে তা দেখানো হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ব্রিফ করেছে, বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ফিরে দেখিয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এখানে আসবে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আরও কথা বলবে। সবকিছু করা হয়েছে তাদের কনফিডেন্স বৃদ্ধির জন্য, তাদের আশ্বস্ত করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল আসার পর প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মংডু শহরে প্রচুর রোহিঙ্গা আছে। আমি যতটুকু তথ্য নিলাম সেখানে প্রায় ৮০ শতাংশ রোহিঙ্গা ব্যবসা করছে। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না, এমনটাই জানিয়েছে।’
শুক্রবার যে প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রস্তুতকৃত ১৫টি গ্রাম ও সেখানে নির্মিত অন্যান্য অবকাঠামোগুলো পরিদর্শনে গেছেন ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন মো. মিজানুর রহমান। তিনি ছাড়াও প্রতিনিধি দলে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার-২ (অতিরিক্ত সচিব) মোহা. খালিদ হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব বিশ্বজিৎ দেবনাথসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য আরও সমর্থন বাড়ান: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
২০ সদস্যের রোহিঙ্গা দলে তিনজন রোহিঙ্গা নারীও ছিলেন। ২৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল মিয়ানমার রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন শেষে বিকাল ৫ টা ৫০ মিনিটে টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি ঘাটে পৌঁছান। এর আগে তারা একই দিন সকাল ১০টায় মিয়ানমারের উদ্দেশে টেকনাফ ছাড়েন।
প্রতিনিধি দলের রোহিঙ্গা সদস্য ও ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘অনেক বছর পর আমাদের দেশ মিয়ানমার দেখার সুযোগ হয়েছে। আমরা মিয়ানমার গেছি, আমাদেরকে ক্যাম্পগুলো দেখিয়েছে। আমরা জানতে চাইলাম, ক্যাম্প কেন, কার জন্য? তারা বলেছে, আপনাদের জন্য। আমরা বলেছি, আমরা যদি সিকিউরিটি না পাই, নাগরিকত্ব কার্ড না পাই তাহলে কি হবে। তখন তারা জানিয়েছে, এনভিসি কার্ড নিতে হবে। আমরা বলেছি এনভিসি কার্ড অতিথিদের জন্য, আমরা এনভিসি কার্ড নেওয়া মানে আমরাও অতিথি বা মেহমানের মতো। এক্ষেত্রে আমরা কোনো জমির মালিক হতে পারব না, নাগরিকত্ব পাব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দাবি করেছি, আমাদের গ্রামে আমাদের ভিটা-জমি ফিরিয়ে দিতে, তখন আমরা নিজেদের টাকায় ঘর তৈরি করে থাকব। আমাদের শেষ কথা হয়েছে যে আমাদের নিরাপত্তা, নাগরিকত্ব, ভিটে-মাটি না দিলে আমরা মিয়ানমার ফিরে যাব না।’
প্রতিনিধি দলের সদস্য ও ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা সুফিয়ান বলেন, ‘সেখানে গিয়ে আমরা আমাদের দাবি দিয়েছি। আমাদের নাগরিকত্ব দাবি করেছি, ভিটামাটি দাবি করেছি, সেগুলো ফেরত দিলে আমরা যাব, সেটা জানিয়ে এসেছি। আমাদের গ্রামের জায়গাগুলো ঘুরে দেখেছি, কিন্তু সেখানে যাওয়ার মতো এখনও সুযোগ দেখছি না দাবি আদায়ের আগে। আমরা এখানে (বাংলাদেশে) থেকেই ওই দাবি আদায় করে তারপর মিয়ানমার ফিরতে চাই।’
উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশ থেকে আট লাখের বেশি রোহিঙ্গার একটি তালিকা পাঠানো হয় মিয়ানমারের কাছে। ওই তালিকা থেকে ফেরত নিতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রথম দফায় প্রায় এক হাজার ১৪০ জনকে নির্ধারণ করে দেশটি। সেখান থেকে ৪২৯ জনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল মিয়ানমার। পরে গত ১৫ মার্চ ১৯ সদস্যদের একটি টেকনিক্যাল টিম বাংলাদেশের টেকনাফে এসে ১৭৭ রোহিঙ্গা পরিবারের ৪৮০ জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মিয়ানমারে ফিরে যায়।
আরও পড়ুন: প্রত্যাবাসন ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখাইনের উদ্দেশে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল
১ বছর আগে
‘বিজিবি সতর্ক, মিয়ানমার থেকে এখন কেউ ঢুকতে পারবে না’: শাহরিয়ার আলম
রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির অবনতির কারণে এখন মিয়ানমার থেকে কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ আরও ভালোভাবে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
বৃহস্পতিবার (০১ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদের সংস্থাগুলো ভালোভাবে প্রস্তুত। বিজিবিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে সরকার: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা মনে করি না যে ২০১৭ সালের মতো দেশত্যাগের কোনো ঘটনা ঘটবে। যদিও অনেকে আশঙ্কা করছে যে মিয়ানমারে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে বাকি রোহিঙ্গারাও বাংলাদেশে পাড়ি দেবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়।
শাহরিয়ার বলেন, আমরা সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।
তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মর্টার শেল ছোড়ার পর দেশটিকে দুইবার সতর্ক করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াও মোকে তলব করে এবং এর একদিন আগে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মিয়ানমারের মর্টার শেল ছোড়ার তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার আইসিসি ও আইসিজের বিচারের বাইরে নয়: শাহরিয়ার আলম
খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে
ফিরে দেখা ২০২০: রোহিঙ্গাদের জন্য যন্ত্রণার আরও এক বছর
মানুষ স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও স্বপ্ন দেখেছিল ২০২০ সালে মর্যাদার সাথে তাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের। কিন্তু তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। সামনে আবারও নতুন একটি বছর, আবারও স্বপ্ন দেখছেন তারা।
৩ বছর আগে
রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর নীতি ব্যর্থ: জাতিসংঘের বিশেষ দূত
মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রোজ বৃহস্পতিবার বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে তিন বছর পরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে তাদের নীতি ব্যর্থ হয়েছে।
৪ বছর আগে
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সাথে আলোচনায় চীনা প্রেসিডেন্ট
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এবং রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে মিয়ানমারকে তার সামর্থ্যের অনুযায়ী আরও সহায়তা প্রদানের সদিচ্ছার কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং।
৪ বছর আগে