রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের নতুন মানবিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, এ সংকটে আপনাদের সাড়া বিশ্বের জন্য এক উদাহরণ হয়েছে।’
তিনি জানান, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ, এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্র এমনভাবে কাজ করে যাবে যাতে ‘মানবিক নীতিগুলো বজায় থাকবে’ এবং কক্সবাজারের সব মানুষ উপকৃত হবে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আজকের দিনটি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন হওয়ায় তিনি ফেসবুক লাইভে এসেছেন।
‘কক্সবাজারে বাস করা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। এটি গুরুত্বপূর্ণ লাখো বাংলাদেশিদের জন্য, যারা উদ্বাস্তুদের গ্রহণে তাদের অন্তর খুলে দিয়েছিলেন। এটি গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের জন্য, যারা নিরাপদ আশ্রয়স্থল দেয়ার জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছিল। এবং এটি গুরুত্বপূর্ণ এ চলমান সংকট সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করা আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী ও এনজিওগুলোর জন্য,’ বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু ও বাংলাদেশে তাদের আশ্রয় দেয়া স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ও ক্ষতিগ্রস্ত অন্য জনগোষ্ঠীর জন্য নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সম্মেলনে ১২৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি নতুন মানবিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।
এ অর্থ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া উদ্বাস্তুদের একটি অংশের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জরুরি চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে। সেই সাথে এ তহবিল মিয়ানমারে রোহিঙ্গা অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের সদস্যসহ সে দেশে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকজনকে জীবনরক্ষাকারী সহায়তা দেবে। এদের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ হিসেবে এখনো শীর্ষস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৭ সালের আগস্টে সহিংসতার সূত্রপাত হওয়ার পর থেকে দেশটি নতুন সাহায্য মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৬৬৯ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা করেছে। যার বেশিরভাগই- ৫৫৩ মিলিয়ন ডলার ছিল বাংলাদেশের ভেতরে চলমান কর্মসূচিগুলোর জন্য।
‘আমরা ১২৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি নতুন সহায়তার প্রতিশ্রুত দিয়েছি। যার মধ্যে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু ও আশ্রয়দাতা বাংলাদেশিদের সহায়তার জন্য ৮৯ মিলিয়ন ডলার যাবে বাংলাদেশের কর্মসূচিগুলোতে,’ বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাসহ আক্রান্ত সবার জন্য মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে যৌথ পরিকল্পনা উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দাতা দেশগুলো একসাথে কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্র বিগত বছরগুলো ধরে বাংলাদেশের সাথে যে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে নতুন মানবিক সহায়তা তার একটি মাত্র দিক বলে মন্তব্য করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
১৯৭১ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি উন্নয়ন সাহায্য দিয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরই বাংলাদেশ জুড়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে মার্কিন সরকার ইউএসএআইডির মাধ্যমে ২১৯ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে।