রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সাথে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সহায়তার জন্য বুধবার আবারও বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা মানবিক দিক চিন্তা করে তাদের আশ্রয় দিয়েছি, কিন্তু এতো বিশাল জনগোষ্ঠীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আশ্রয় দেয়া আমামাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি বিশ্ব সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের মর্যাদা ও শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী রেকর্ড করা তিন দিনের 'আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত নবম মস্কো সম্মেলনে' বক্তব্যের সময় এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: কোভ্যাক্সের ওপর নির্ভর রোহিঙ্গাদের টিকাদান
তিনি বলেন, ‘প্রায় চার বছর ধরে বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়ে আসছে। তারা বাংলাদেশের পাশাপাশি এই অঞ্চলে একটি বিশাল নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে দেশে সংঘাত আন্তঃদেশীয় নিরাপত্তা সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে।
পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন যে, নিরাপত্তার ধারণার মধ্যে এখন সামরিক ঝুঁকি, ব্যক্তির আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রয়োজন, অস্বেচ্ছাপ্রণদিত গণ অভিযোজন, পরিবেশগত নিরাপত্তা এবং অন্যান্য নতুন নতুন নিরাপত্তা ঝুঁকি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
‘এমনকি সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা, বিচ্ছিন্নতাবাদ, গণবিধ্বংসী অস্ত্র, সাইবার অপরাধ, আঞ্চলিক সংঘাত এবং পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা দেখা দিয়েছে,’বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট: জাতিসংঘ মহাসচিবের হস্তক্ষেপ চায় বাংলাদেশ
সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ 'জিরো-টলারেন্স' নীতি বজায় রেখেছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
হাসিনা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির প্রশংসা করে বলেন, আমি আশা করি মধ্যপ্রাচ্যের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করবে।
কোভিড-১৯ মহামারী সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি, কারণ এর মাধ্যমে মানুষ কেবল মারাই যাচ্ছে না, অর্থনীতিকেও বাধাগ্রস্ত করেছে এবং সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা নিশ্চিত করার এবং বিভিন্ন খাতে যথাযথ প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে মহামারি মোকাবিলা করে পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে।
তিনি সকল নাগরিককে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং এর জন্য সরকার সকল উৎস থেকে ভ্যাকসিন নেয়ার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের আহ্বান বাংলাদেশের
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার ভ্যাকসিনের জন্য রুশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। আমি উল্লেখ করতে চাই যে, বাংলাদেশের ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা রয়েছে এবং যদি উৎপাদনে যেতে পারি, তবে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সহায়তা করতে পারব।’
জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি প্রধান সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত এর প্রতি যথাযথ নজর দেয়া।