শুধু প্রবেশাধিকার নয়; সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ভিসা মানে কাজের সুব্যবস্থা এবং পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুবিধা। চাকরি, বিনিয়োগ, উদ্যোক্তা, শিক্ষা এবং জীবনধারণের জন্য আদর্শ গন্তব্য হয়ে ওঠার সুদূরপ্রসারী প্রকল্প নিয়ে তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি।
বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের জনসাধারণ দেশটিতে প্রবেশ করে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণে সফল হচ্ছে। সেই সুযোগ-সুবিধা এবার যেন আরও বিস্তৃত হলো বিশ্ব জুড়ে মেধাবী শ্রেণির জন্য। ২০২২ এর ৩ অক্টোবর থেকে ইউএইর গোল্ডেন ভিসার ক্যাটাগরি আরও বৃদ্ধি করা হবে। পাশাপাশি নতুনভাবে ইউএই গ্রিন ভিসা চালু হচ্ছে।
সম্প্রতি আলোড়ন সৃষ্টিকারি ইউএই ভিসা নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা
ইউএই গোল্ডেন ভিসা প্রকল্প
এই ভিসার মাধ্যমে মেধা সম্পন্ন বিদেশিরা ১০ বছর পর্যন্ত ইউএইতে বসবাস, চাকরি ও অধ্যয়ন করতে পারেন। এই রেসিডেন্সি প্রকল্পটি পুনর্নবীকরণযোগ্য এবং এ ভিসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে বাছাই করা হয়। এবার এর আওতাভুক্ত হবে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ। নতুন বিভাগ সম্প্রসারণের জন্য বাড়বে আবেদনকারী মেধা শ্রেণি। নতুন সংযোজনের মধ্যে রয়েছে পেশাদার, বিশেষজ্ঞ এবং ব্যতিক্রমী প্রতিভাধর শ্রেণি।
নতুন প্রকল্পে পর্যটক, ব্যবসায়িক ভ্রমণকারী, চাকরিপ্রার্থী, বন্ধুবান্ধব এবং দেশে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক ইউএইর বাসিন্দাদের আত্মীয়দের থাকার জন্য অতিরিক্ত প্রবেশের অনুমতি যুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের মেডিকেল ভিসা: আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ভিসা প্রসেসিং ফি
ইউএই গোল্ডেন ভিসার মেয়াদ ও অন্যান্য সুবিধা
→ ছয় মাসের মধ্যে একাধিকবার ইউএইতে এন্ট্রির অনুমতি থাকে। এরপর রেসিডেন্সি পারমিট ইস্যু করা হয়
→ আবাসিক ভিসা ১০ বছরের জন্য বৈধ এবং পুনঃনবায়নযোগ্য
→ যেকোনো সময় ধরে ইউএইর বাইরে থাকা যায়; এমনকি এতে ভিসা বাতিলও হয় না
→ স্বামী/স্ত্রী ও যে কোনো বয়সের সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের স্পন্সর করা যায়
→ যে কোনো সংখ্যক গৃহকর্মীকে স্পনসর করা যায়
→ গোল্ডেন ভিসাধারী মারা গেলে ভিসার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার পরিবারের লোকেরা ইউএইতে থাকতে পারেন|
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা মুক্ত দেশের তালিকা ২০২১
ইউএই গোল্ডেন ভিসা লাভের যোগ্যতা
বিশ্বের সেরা প্রতিভাদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ইউএই ছয়টি নতুন বিভাগ যুক্ত করেছে এই ভিসা প্রকল্পে।
১০ বছর মেয়াদী ভিসার এই নতুন বিভাগগুলো বর্তমানে ট্রায়াল করা হচ্ছে এবং আগামী ৩ অক্টোবর থেকে কার্যকর করা হবে। গোল্ডেন ভিসা সম্প্রসারিত প্রকল্পের জন্য যোগ্যতা অর্জনকারী বিভাগগুলো হলো- পেশাদার, উদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞ, মানবিক ক্ষেত্রে সেরা ব্যক্তিত্ব, ডাক্তার ও নার্স এবং ফ্রন্টলাইন হিরো।
পেশাদার কর্মকর্তা
শিক্ষা, আইন, বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল, তথ্য প্রযুক্তি, সামাজিক বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন শাখায় পেশাদার চাকরিজীবীরা এই ক্যাটাগরিতে পড়বেন। এখানে শর্ত হলো-
→ ব্যক্তির অবশ্যই ইউএইর সঙ একটি বৈধ কর্মসংস্থান চুক্তি থাকতে হবে
→ মানবসম্পদ ও আমিরাতের শ্রেণীবিভাগ অনুযায়ী ব্যক্তিকে প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হতে হবে
→ ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম স্নাতক ডিগ্রি বা তার সমতুল্য হতে হবে
→ ব্যক্তির মাসিক বেতন ৩০ হাজার আমিরাতি দিরহাম (নূন্যতম ৮,১৬৭ মার্কিন ডলার) হতে হবে|
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিদের জন্য কার্ডে ও অনলাইনে ভিসা ফি প্রদানের সুযোগ আনল যুক্তরাজ্য
রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগকারী
→ নূন্যতম ২ মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম মূল্যের সম্পত্তির মালিকানা থাকতে হবে, অথবা
→ স্থানীয় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ক্রয় করা কোন সম্পত্তি থাকতে হবে, অথবা
→ অনুমোদিত স্থানীয় রিয়েল এস্টেট কোম্পানির তালিকা থেকে এক বা একাধিক ২ মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম মূল্যের কমপ্লিট বা অফ-প্ল্যান সম্পত্তির মালিকানা থাকতে হবে|
সফল উদ্যোক্তা
উদ্যোক্তাগণ তাদের কোম্পানিকে ইউএইতে নিবন্ধিত করলে এই ভিসা পেতে পারেন। তবে সে জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে অবশ্যই ১ মিলিয়ন বা তার বেশি বার্ষিক আয় সহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এসএমই) বিভাগের অধীনে পড়তে হবে। অধিকন্তু, উদ্যোক্তাদের জন্য গোল্ডেন রেসিডেন্সও পাওয়া যেতে পারে, যদি-
→ ব্যক্তিটি একজন প্রতিষ্ঠাতা বা পূর্ববর্তী উদ্যোক্তা প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন হন। এক্ষেত্রে পূর্ববর্তী বিক্রিত প্রকল্পটির মূল্য কমপক্ষে ৭ মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম (প্রায় ১.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) হতে হবে
→ প্রকল্প বা ধারণার জন্য অর্থনীতি মন্ত্রণালয় বা উপযুক্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন|
আরও পড়ুন: ধনী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে প্রিমিয়াম ভিসা চালু করছে মালয়েশিয়া
ব্যতিক্রমী প্রতিভা সম্পন্ন
শিল্প, সংস্কৃতি, ডিজিটাল প্রযুক্তি খেলাধুলা, উদ্ভাবন, ওষুধ, আইন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরা ব্যক্তিরা এই ভিসায় আবেদন করার যোগ্য। ১০ বছরের এই ভিসাটির জন্য শুধুমাত্র তাদের মেধা যাচাই করা হবে। কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরির অবস্থা, মাসিক বেতন বা পেশাগত অবস্থার নয়। তবে এর জন্য স্থানীয় সরকারের সুপারিশ বা অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
বিশেষজ্ঞদের জন্য
চিকিৎসা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, তথ্য প্রযুক্তি, ব্যবসা ও প্রশাসন, শিক্ষা, আইন, সংস্কৃতি এবং সামাজিক বিজ্ঞান সহ বিভিন্ন শাখায় শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পেশাগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে উচ্চ দক্ষ কর্মীরা এই ক্যাটাগরির আওতাভুক্ত।
বিজ্ঞানী বা গবেষক
বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল, প্রযুক্তি, জীবন বিজ্ঞান এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে পিএইচডি বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে এর জন্য তাদেরকে অবশ্যই এমিরেটস সায়েন্টিস্ট কাউন্সিলের সুপারিশ লাভ করতে হবে।
অসামান্য মেধাসম্পন্ন স্নাতক শিক্ষার্থী
ইউএইর মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ স্কোর প্রাপ্ত বিদেশি শিক্ষার্থীরা ১০ বছরের ভিসাটির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তদুপরি, বিশ্বের ১০০টি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া মেধাবী শিক্ষার্থী এবং স্নাতকরাও এই ভিসা প্রকল্পের আওতায় পড়বেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা-তাসখন্দ এফওসি: দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষরের আহ্বান বাংলাদেশের
মানবিক ক্ষেত্রে সেরা ব্যক্তিত্ব
→ আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক সংস্থার বিশিষ্ট সদস্যরা
→ জনসাধারণের কল্যাণার্থে নিয়জিত সমিতির সেরা সদস্যরা
→ মানবিক ক্ষেত্রে স্বীকৃতি পুরস্কারপ্রাপ্তরা
→ বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক এবং মানবিক প্রচেষ্টার স্পন্সর
ডাক্তার, নার্সদের এবং ফ্রন্টলাইন হিরো
ইউএই প্রতিরক্ষার প্রথম লাইনের ডাক্তার ও নার্সদের তাদের প্রচেষ্টা এবং ত্যাগের স্বীকৃতিতে দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের অনুমতি দিচ্ছে। ইউএইর স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার লাইসেন্সপ্রাপ্ত সমস্ত ডাক্তাররা আইসিএ’র (ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ) গোল্ডেন রেসিডেন্সি পরিষেবার মাধ্যমে জুলাই ২০২১ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২২-এর মধ্যে গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। করোনা মহামারির সময় জীবন বাজী রেখে কাজ করা নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও এখন মর্যাদাপূর্ণ গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার যোগ্য। আইসিএ’র সঙ্গে সম্পৃক্ত ইউএই জুড়ে স্থাপিত সাতটি কেন্দ্র যে ডাক্তার এবং নার্সদের পরিশ্রমের ফসল, তারা ব্যক্তিগতভাবে ভিসার জন্য আবেদন করতে চান।
আরও পড়ুন: ভারতের টুরিস্ট ভিসা কীভাবে পাবেন: আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, প্রসেসিং ফি
সংযুক্ত আরব আমিরাতের গ্রিন ভিসা
ইউএই গ্রিন ভিসা প্রকল্প
এটি ইউএইর কাজ এবং রেসিডেন্সি পারমিট থেকে ভিন্ন একটি নতুন ভিসা ক্যাটাগরি। এর মাধ্যমে উচ্চ দক্ষ ব্যক্তি, বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা, শীর্ষ ফলাফলধারী শিক্ষার্থী ও স্নাতকদের ইউএইর কোন কোম্পানির সাথে চুক্তি ছাড়াই নিজস্ব স্পন্সরে ইউএইতে বসবাসের অনুমতি দেবে। এটি মূলত ইউএই সরকারের ব্যতিক্রমী প্রতিভা আকর্ষণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রচেষ্টার একটি অংশ।
ইউএই গ্রিন ভিসার মেয়াদ ও অন্যান্য সুবিধা
গোল্ডেন ভিসার পাশাপাশি ইউএই গ্রিন ভিসাতে কিছু উল্লেখযোগ্য উন্নতি বাস্তবায়িত হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নতুন পাঁচ বছরের আবাসিক সুবিধা, যা মূলত প্রতিভাধর, দক্ষ পেশাদার, ফ্রিল্যান্সার, বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ। তাদের জন্য সব ধরনের আবাসিক চাহিদাগুলোকে সহজতর করার পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও উন্মুক্ত করা হচ্ছে। বসবাসের অনুমতি বাতিল বা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে পরিবারের লোকদের দেশে থাকার জন্য দীর্ঘ নমনীয় গ্রেস পিরিয়ডসহ আরও সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
নতুন প্রকল্প ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের সুযোগ-সুবিধার পরিধি আরও প্রসারিত করেছে। একজন বাসিন্দা এখন সহজেই তাদের তাদের স্ত্রী-সন্তানদের ইউএইতে আনতে পারেন। উপরন্তু শিশুদের বয়স আগে ১৮ বছর থাকলেও এখন ২৫ বছর করা হয়েছে। অবিবাহিত মেয়েদের জন্য কোনো বয়সসীমা নেই। মেধাবী শিশুদের তাদের বয়স নির্বিশেষে বসবাসের অনুমতি দেয়া হয়। গ্রিন রেসিডেন্স ধারককে তার অতি নিকটস্থ আত্মীয়দের নিয়ে আসার অনুমতি দেয়া হবে এবং সমস্ত ক্ষেত্রে, পরিবারের সদস্যদের বসবাসের সময়কাল ভিসাধারীর মতোই হবে।
আরও পড়ুন: ভিসা ছাড়া পোল্যান্ডে ঢুকতে পারবেন ইউক্রেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা
ইউএই গ্রিন ভিসা লাভের যোগ্যতা
দক্ষ কর্মী
যে কোনো কাজে দক্ষ কর্মীদের জন্য এই ভিসা কোন স্পন্সর বা নিয়োগকর্তা ছাড়াই পাঁচ বছরের আবাসিক সময়কাল প্রদান করে।
→ আবেদনকারীদের একটি বৈধ কর্মসংস্থান চুক্তি থাকতে হবে
→ মানব সম্পদ ও আমিরাত মন্ত্রণালয় অনুযায়ী ব্যক্তিকে প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি হতে হবে
→ শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি বা তার সমতুল্য হওয়া বাঞ্ছনীয়
→ আবেদনকারীর বেতন নূন্যতম ১৫ হাজার আমিরাতি দিরহাম (৪,০৮৩.৭৪ মার্কিন ডলার) হতে হবে
ফ্রিল্যান্সার
→ ফ্রিল্যান্সিং এবং স্ব-কর্মসংস্থানের জন্য গ্রিন রেসিডেন্স ইউএইতে স্পন্সর বা নিয়োগকর্তার প্রয়োজন ছাড়াই পাঁচ বছরের বসবাসের ব্যবস্থা করে
→ মানব সম্পদ ও আমিরাত মন্ত্রণালয় থেকে ব্যক্তিকে ফ্রিল্যান্স বা স্ব-কর্মসংস্থানের অনুমতি প্রাপ্ত হতে হবে
→ ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে স্নাতক ডিগ্রি বা বিশেষ ডিপ্লোমা
→ বিগত দুই বছরে স্ব-কর্মসংস্থান থেকে বার্ষিক আয় কমপক্ষে তিন দশমিক ছয় লাখ আমিরাতি দিরহাম (৯,৮০০ মার্কিন ডলার), অথবা আবেদনকারীকে দেশে থাকার সময় তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা প্রমাণ করতে সক্ষম হতে হবে|
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ব্রাজিলের ভিসা অব্যাহতি চুক্তি স্বাক্ষর
বিনিয়োগকারী বা অংশীদার
→ বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য এই ভিসা বাণিজ্যিক কার্যক্রম প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগকারীদের জন্য পাঁচ বছরের বসবাসের ব্যবস্থা করে।
→ ব্যক্তির বিনিয়োগের অনুমোদন এবং কমপক্ষে এক মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম বিনিয়োগের প্রমাণপত্র লাগবে
→ যদি বিনিয়োগকারীর একাধিক লাইসেন্স থাকে, তাহলে মোট বিনিয়োগকৃত মূলধন গণনা করা হবে। সেক্ষেত্রে উপযুক্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।
জব এক্সপ্লোরেশন ভিসা
এই ভিসা মূলত তরুণ প্রতিভা এবং দক্ষ পেশাদারদের দেশে উপলব্ধ চাকরির সুযোগ অন্বেষণের জন্য আকৃষ্ট করার এক মহৎ উদ্যোগ। ভিসার জন্য স্পন্সরের প্রয়োজন নেই, তবে ব্যক্তিকে অবশ্যই-
→ মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রণালয় অনুসারে প্রথম বা দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি হতে হবে
→ বিশ্বের সেরা ৫০০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতক করা থাকতে হবে
→ স্নাতক ডিগ্রি বা তার সমতুল্য শিক্ষাগত যোগ্যতার নিচে গ্রহণযোগ্য নয়|
আরও পড়ুন: ঢাকা থেকে ভিসা দেয়ায় রোমানিয়াকে ধন্যবাদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
রিমোট ওয়ার্ক ভিসা
দুবাইয়ের এক বছরের ভিসা আনুষ্ঠানিকভাবে ভার্চুয়াল ওয়ার্কিং প্রোগ্রাম (ভিডব্লিউপি) নামে পরিচিত। এই ব্যবস্থাটি ভিসাধারীদের ইউএইর বাইরে থেকে দুবাইতে স্থানান্তরিত করতে এবং আইনত তাদের বর্তমান কোম্পানি বা সংস্থার জন্য দূর থেকে কাজ করার অনুমতি দেয়। এটি বিদেশি নাগরিকদের নিজস্ব খরচে ইউএইতে প্রবেশ করতে এবং ভিসার সঙ্গে সম্পৃক্ত শর্তাবলী অনুসারে কাজ করার অনুমতি দেয়।
এক বছরের ভিসাটি বিশেষভাবে দক্ষ কর্মী ও উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি অন্যান্য অবস্থান-স্বাধীন ব্যক্তিদের সুবিধার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। দুবাইতে বসবাসের জন্য আবেদন যদি ইউএই দ্বারা অনুমোদিত হয়, তাহলে পরিবারকেও সঙ্গে আনা যাবে। সেক্ষেত্রে শর্তগুলো হলো-
→ বর্তমান নিয়োগকর্তার কাছ থেকে এক বছরের একটি বৈধ চুক্তিসহ কর্মসংস্থানের প্রমাণ লাগবে
→ প্রতি মাসে উপার্জিত বেতন ন্যূনতম পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার হতে হবে। এর জন্য বিগত মাসের বেতন স্লিপ এবং আগের তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে হবে।
→ কোম্পানির মালিক হলে, এক বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য কোম্পানির মালিকানার প্রমাণ লাগবে
→ উদ্যোক্তার মাসিক গড় আয় পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার হতে হবে। এর জন্য পূর্ববর্তী তিন মাসের জন্য কোম্পানির অ্যাকাউন্টের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে হবে।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপে অবৈধ বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভিসা সংগ্রহের আহ্বান
পরিশেষে
কর্মক্ষেত্র হিসেবে সেরা গন্তব্য হওয়ায় বাংলাদেশিদের কাছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা প্রাপ্তি বরাবরই আকর্ষণীয় ছিল। এখন গোল্ডেন ভিসার নতুন ক্যাটাগরি ও গ্রিন ভিসার মাধ্যমে অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। মেধাবী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নিজেদের কর্মক্ষেত্রে সেরা ব্যক্তিরা এখন নিমেষেই অতি প্রত্যাশিত সুবিধাগুলো অর্জন করে নিতে পারবে। মানবসম্পদ উন্নয়নের এই মহান উদ্যোগ অচিরেই উন্নত সংস্কৃতি ও সমৃদ্ধশালী অবকাঠামোর অধিকারি হয়ে ওঠার দৃষ্টান্তমূলক নকশা।