সরকার চলতি অর্থবছরে সারাদেশে কৃষকদের কাছ থেকে মোট সাড়ে ৯ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করবে। কর্মসূচির আওতায় তিন লাখ মেট্রিক টন ধান, পাঁচ লাখ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল এবং দেড় লাখ মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করা হবে।
রবিবার খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের এক ভার্চুয়াল সভায় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এ বছর আমন ধান, চাল ও গমের সরকারি সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। সভায় আমন ধানের সরকারি ক্রয় মূল্য প্রতি কেজি ২৭ টাকা, চালের মূল্য প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং গমের মূল্য প্রতি কেজি ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। চলতি অর্থ বছরে (২০২১-২২) উল্লিখিত মূল্যে আগামী ৭ নভেম্বর থেকে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। এসময়ে তিন লাখ মেট্রিক টন আমন ধান, পাঁচ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ক্রয় করা হবে। এছাড়া আগামী ১ এপ্রিল থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টন গম ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সভায়।
উল্লেখ্য, গত বছর আমন ধান ও চালের দাম ছিল যথাক্রমে ২৬ ও ৩৬ টাকা।
সভায় অন্যদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, কৃষকের জন্য নায্য মূল্য নিশ্চিত করতে চায় সরকার। পাশাপাশি খাদ্যের নিরাপত্তা মজুতও বৃদ্ধি করতে চায়। বেরো ধান সংগ্রহে সফল হয়েছে সরকার। সে ধারাবাহিকতায় আমন সংগ্রহেও সফলতা অর্জন সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রান্তিক কৃষকের কাছে প্রণোদনার সুফল পৌঁছে দিতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি প্রকৃতি ও অঞ্চল নির্ভর। দেশে ধানের পাশাপাশি পেয়াজ, রসুনসহ আরও বেশ কিছু কৃষি পণ্য দেশে উৎপাদিত হলেও সংরক্ষণের অভাবে কৃষক নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। দেশে কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাওয়া, শিল্পকারখানা বৃদ্ধি পাওয়া এবং সর্বোপরি নন হিউম্যান কনজামশন বেড়ে যাওয়ার পরও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধানের আবাদ শুরু হয়েছে। ধানের উৎপাদন টেকসই করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ খাদ্য পণ্যসহ আরও বেশ কিছু পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে থাকে। মান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদন হলে রপ্তানি সম্ভাবনা আরও বাড়বে।
সভায় অর্থ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং দূর্যোগ ব্যবন্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সচিব ও সচিবগণ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মতামত তুলে ধরেন এবং খাদ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে আগামী ৬ মাসের মধ্যে স্মার্ট কার্ড: খাদ্যমন্ত্রী
চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.১৩ শতাংশে উন্নীত হবে: অর্থমন্ত্রী