তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজের একটি বড় সমস্যা হলো দুর্নীতি। এটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। যা সমাজের বিরাট অংশকে শোষিত ও বঞ্চিত করছে। সমাজে ব্যাপক বৈষম্য তৈরি করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে।’
সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে এবং এ নীতি বাস্তবায়নের জন্য দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যায়নরত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘শিক্ষার সব সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও একটি বিষয় আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। বিশ্বে এ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত যে, যে জাতি যত উন্নত ও শিক্ষিত সে জাতির মধ্যে অপরাধ প্রবণতা তত কম। কিন্তু বাংলাদেশে উন্নয়নের গতি ও শিক্ষার হার বাড়লেও সামাজিক অপরাধ কমছে না। সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো শিক্ষিত লোকের মাধ্যমেই অপরাধগুলো বেশি ঘটছে এবং এমন কোনো অপরাধ নেই যেটা শিক্ষিত লোকের মাধ্যমে ঘটছে না। এটা কেন হচ্ছে তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। আমাদের পরিবার, সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
শিক্ষার আসল মর্মার্থ আত্মস্থ করে শিক্ষার্থীদের মাদক ও অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা করবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
যুগোপযোগী ও মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য। সরকারের একার পক্ষে এ বিশাল দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। সরকারের পাশাপাশি সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি বিশেষ এগিয়ে এলে সরকার নতুনভাবে উজ্জীবিত হবে।’
‘আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা এবং এটি করতে হলে সবচেয়ে বড় যে জিনিষটি প্রয়োজন হবে সেটা হচ্ছে মানসম্পন্ন শিক্ষা,’যোগ করেন তিনি।
অতীতে মানসম্পন্ন শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে এ বৈষম্য অনেকটাই কমে এসেছে। এখন গ্রাম ও শহরের লেখাপড়া সমান তালে চলছে। শিক্ষার্থী যে প্রতিষ্ঠানেই পড়ুক না কেন সে যেন মানসম্পন্ন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করার পথ বন্ধ করা হচ্ছে। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন।