সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে শনিবার (২৫ নভেম্বর) এক চীনা নাগরিকসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এ ঘটনায় চক্রটির ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই চক্রের প্রধান ঝ্যাং জি ঝাহ্যাং (৬০) নামে এক চীনা নাগরিক।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) রাজধানীর হাতিরঝিল ও কাফরুল থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।
চক্রটি বৈধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছাড়াই সহজ ঋণের সুযোগ এবং চাকরির আবেদনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে প্রতারণামূলক স্কিমগুলোতে জড়িত ছিল।
অভিযানের সময় পুলিশ সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে আলামত জব্দ করে এবং ২৯টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের তথ্য উদঘাটন করে।
আরও পড়ুন: রংপুরে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, গত দুই বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এই গ্রুপটি।
তবে এই অর্থের কোনোটিই বাংলাদেশে নেই। সবগুলোই চীনে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
শুধু গত ছয় মাসে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ৫০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এই চক্রটি দেশটিতে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ মানুষকে প্রতারিত করেছে।
ডিবি প্রধান তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, চীনা নাগরিকদের তৈরি একটি অ্যাপের সার্ভার সিঙ্গাপুরে রয়েছে এবং কল সেন্টারগুলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে অবস্থিত। চক্রটি ভুক্তভোগীদের অল্প পরিমাণ টাকা দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত।
তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করার জন্য প্রতারিতদের প্রলুব্ধ করেছিল। যা একবার ইনস্টল হয়ে গেলে প্রতারকদের ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোনে ফটো, ভিডিও এবং যোগাযোগের তালিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারত।
পরবর্তীকালে, প্রতারকরা ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইল করতে এবং অর্থ আদায়ের জন্য এই তথ্য ব্যবহার করে, কখনও কখনও মিথ্যা ছবি এবং ভিডিও তৈরি করে।
হারুন আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশে এসব অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়ে ৬০ জনের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কেউ আত্মহত্যা করেছে কিনা তা জানা যায়নি।
ডিবি প্রধান পরামর্শ দেন, এই চক্রের হাতে কেউ প্রতারিত হলে ভুক্তভোগীর মামলা করা উচিত।
তিনি আরও জানান, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তারা আত্মগোপনে চলে গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনতে ডিবির অভিযান চলছে।