শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এসব দাবি জানান।
তিনি বলেন, রেলপথে টিকিট কালোবাজারি ও শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ছেন বেশির ভাগ ঘরমুখো যাত্রী। সড়ক পথে ফিটনেসবিহীন ট্রাকে পশু ও বাসে যাত্রী বহনের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে।
‘একদিকে বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাটে যানবাহনের গতি কমায় উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে থেমে থেমে যানবাহন চলছে। অন্যদিকে মানবসৃষ্ট দুর্ভোগ নিরসনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজির কড়া নিদের্শনা উপেক্ষা করে পথে পশুবাহী ট্রাক থামিয়ে পুলিশ ও বিভিন্ন সংগঠনের নামে চাঁদাবাজির কারণে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কে কৃত্রিম যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।
সড়ক-মহাসড়ক এবং নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে পশুর হাটের কারণেও কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে মোজাম্মেল হক উল্লেখ করেন।
তিনি আরও জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ি নৌপথে ফেরি ও লঞ্চ পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। শত শত যানবাহনের হাজার হাজার ঘরমুখো যাত্রীকে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পারাপারের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
প্রতি ঈদের মতো এবারও আকাশপথের যাত্রীরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় ৪ থেকে ৫ গুণ বাড়তি দামে টিকিট কাটতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব।
সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে ঈদকে কেন্দ্র করে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে ভাড়া ডাকাতি চলছে। যে যার মতো ভাড়া আদায় করছে। সড়ক পথে স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া নেয়া হচ্ছে। নৌপথে লঞ্চে ধারণক্ষমতার প্রায় তিন থেকে চারগুণ অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হচ্ছে। রেলপথে ৮০ শতাংশ ট্রেনে স্বাভাবিক সময়ে কোচ ও আসন সংকটে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেন্ডেলে ঝুলে বা ছাদে ভ্রমণে বাধ্য হচ্ছেন।
সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ঈদে ঢাকা থেকে ১ কোটি ৫ লাখ এবং দেশব্যাপী এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাতায়াত করবে আরও প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ যাত্রী। সব মিলিয়ে ১২ দিনে প্রায় ৪ কোটি ৫৫ লাখ যাত্রী ঈদ যাত্রার বহরে থাকবে।
হয়রানিমুক্ত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে সংগঠনটি যেসব দাবি তুলে ধরেছে তার কয়েকটি হলো- অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ, পশুবাহী ট্রাক থামিয়ে চাদাঁবাজি বন্ধ, সড়ক-মহাসড়কে বসা পশুর হাট-বাজার উচ্ছেদ, টোলপ্লাজাগুলো সব বুথ চালু, দ্রুত গাড়ি পাসিং করা, মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা নিষিদ্ধ, ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ এবং মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকসা, ইজিবাইক, প্যাডেলচালিত রিকসা, অটোরিকসা, নছিমন ও করিমন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ।