জাতীয় যাদুঘরের মূল মিলনায়তনে নয় দিনের এ উৎসবের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. মফিদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উৎসবের পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল স্বাগত বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘নোনা জলের কাব্য’র নেটপ্যাক অ্যাওয়ার্ড জয়
উৎসবের পৃষ্ঠপোষক এম হামিদ, ডিআইএফএফের সভাপতি কিশোর কামাল, এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতার বিচারক এবং খ্যাতিমান শিল্প সমালোচক মঈনুদ্দিন খালেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার নামে উনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসর্গ করা হয়েছে। এটি এমন এক সময়ে চলছে যখন আমরা মুজিববর্ষে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালে ফিল্ম ডেভলপমেন্ট করপোরেশন (এফডিসি) প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সভায় প্রথম বিল উত্থাপন করেন, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) রূপান্তরিত হয়।’
আরও পড়ুন: রবিবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী
চলমান মহামারি সম্পর্কে সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সারা দেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি খুব সফলভাবে মোকাবিলা করেছে এবং বর্তমানে সংক্রমণের মাত্রা ১০ শতাংশের চেয়েও কমে গেছে। তাই আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থে সরকার স্বাস্থ্য ও সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধের শর্তে সিনেমা হলগুলো খুলে দিয়েছে।’
ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, ‘বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিকাশে ভারত সবসময় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা গর্বিত যে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক চলচ্চিত্রের জানুয়ারি থেকে চিত্রগ্রহণ শুরু হয়েছে।’
নয় দিনব্যাপী এ উৎসবে বাংলাদেশসহ ৭৩ দেশের ২২৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
উৎসবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর স্থানগুলো হচ্ছে- জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা মিলনায়তন, শিল্পকলার নন্দন থিয়েটার (মুক্তমঞ্চ), বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্স এবং সীমান্ত স্কয়ার সিনেপ্লেক্স।
আরও পড়ুন: পর্দা নামলো সিনেম্যাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের
এবারের উৎসবে মিলনায়তনের পাশাপাশি অনলাইনেও চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ থাকছে। লাকভেলকি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে উৎসব চলাকালে নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো উপভোগ করতে পারবেন দর্শকরা।
উৎসবে এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন ফিল্মস, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগ থাকছে। সেই সাথে উৎসবে এবারই প্রথম সংযুক্ত হচ্ছে লিজেন্ডারি লিডারস হু চেঞ্জ দি ওয়ার্ল্ড এবং ট্রিবিউট নামে আরও দুটি নতুন বিভাগ।
ট্রিবিউট বিভাগে সত্যজিৎ রায়ের সাতটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হওয়ার পাশাপাশি খ্যাতিমান এ নির্মাতাকে নিয়ে সেমিনার আয়োজন করা হবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের শুটিং জানুয়ারিতে শুরু
উৎসবের অংশ হিসেবে আগামী ১৭-১৮ জানুয়ারি চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা বিষয়ক ‘সপ্তম আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকার্স কনফারেন্স’, ১৯ জানুয়ারি তৃতীয়বারের মতো ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
উৎসব আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।