চট্টগ্রামে এবার পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। উন্মুক্ত এ সৈকত এলাকা দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত।
নগরীর ফয়’স লেক, চিড়িয়াখানা ও নেভাল অ্যাভিনিউতেও দর্শনার্থীদের ভিড় রয়েছে। ফয়’স লেকে কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও সি-ওয়ার্ল্ডকে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে। অবারিত সবুজের প্রান্ত ছুঁয়ে নীলাকাশ যেন নুয়ে পড়েছে এখানে। লেকের স্বচ্ছ পানির বুক চিরে স্পিডবোটে দশ মিনিটের পথ পাড়ি দিলে কনকর্ড সি-ওয়ার্ল্ডের দেখা মিলে। অনেক বিনোদন পিয়াসী মানুষ ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সি-ওয়ার্ল্ডের ওয়েভপুলে কৃত্রিম সমুদ্র সৈকতে সময় কাটাতে আসছেন।
ভিড় দেখা গেছে ভাটিয়ারী গলফ ক্লাব লেকেও। বিশেষ করে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে আসছেন দূর-দূরান্তের মানুষ। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা। ফয়’স লেকের চিড়িয়াখানায়ও দর্শনার্থীদের ভিড়। ছেলে-বুড়ো সব বয়সের মানুষ পশু-পাখির খাঁচার সামনে ভিড় করছেন।
দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় চট্টগ্রামে রয়েছে সবচেয়ে বেশি বিনোদন সুবিধা। প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও ফয়’স লেক ছাড়াও আছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, কর্ণফুলী শিশুপার্ক, স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিয়া স্মৃতি যাদুঘর, শিশুপার্ক, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সংলগ্ন জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স (বর্তমানে স্বাধীনতা পার্ক), আগ্রাবাদ প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর, নেভাল অ্যাভিনিউ মেরিটাইম মিউজিয়াম, ওয়ার সিমেট্রি, ডিসি হিল ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশের বাটারফ্লাই পার্ক।

চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের উপযোগী করে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানাকে বর্ণিলভাবে সাজানো হয়েছে। ছুটিতে মানুষের ভিড় বেড়েছে। ঈদের দিন থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার মানুষ চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেছেন।
চিড়িয়াখানার ম্যানেজার সোহরাব হোসেন জানান, আগামী ৭ দিনে এ সংখ্যা লাখের কাছাকাছি হবে বলে তারা আশা করছেন।
নগরীর বাইরে আনোয়ারা পারকি বিচ, সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক, মিরসরাইয়ের মহামায়া লেক ও ভাটিয়ারী গলফ ক্লাবসহ অন্যান্য বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও দর্শনার্থীর ঢল নেমেছে।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা মোহছেন আউলিয়া কলেজের পাশে বেসরকারিভাবে গড়ে উঠেছে হিলটপ পার্ক। এখানে প্রতিনিয়ত দর্শনার্থীরা আসছেন। তবে ঈদকে ঘিরে দর্শনার্থীদের ভিড় আরও বেড়েছে।
ঈদের দ্বিতীয় দিনেও নগরীর তাজীর দেউড়িস্থ শিশুপার্কে নারী ও শিশু-কিশোরদের প্রচণ্ড ভিড় ছিল। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে এ পার্কে ভিড় করেন। আগ্রাবাদের কর্ণফুলী শিশুপার্কেও একই অবস্থা।
চট্টগ্রামের আরেক প্রাকৃতিক সম্পদ ডিসি হিল পার্ক। পাহাড়ের উঁচু-নিচু ছায়া আর সুনিবিড় পরিবেশের ডিসি হিলেও দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।
চট্টগ্রাম আর্ট কলেজের পাশে গড়ে উঠা নিরব প্রকৃতি ঘেরা ওয়ার সিমেট্রিতেও প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হচ্ছে। এছাড়া সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির ও ইকোপার্ক, রাউজানের রাবার বাগান, মিরসরাইয়ের মুহুরী প্রজেক্টসহ বিভিন্ন বিনোদন স্পটে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষণীয়।