কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজি) কর্নেল আবরার হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রতিটি কারাগারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সারা দেশে ৬৮টি কারাগারে ৪০ হাজার ১০০ জন ধারণ ক্ষমতার বিপরীতে প্রায় ৮৯ হাজার বন্দী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসে বিশ্বে ৩০,৮৭৯ জনের মৃত্যু
ইউএনবির সাথে আলাপকালে আবরার জানান, কারা মহাপরিদর্শকের নির্দেশের পর দেশের সব কারাগারে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিশেষত ঠাণ্ডা, জ্বর এবং কাশিতে আক্রান্ত বন্দীদের হাসপাতালে আলাদা রাখা হয়েছে।
এছাড়া কারা অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক জানান, ২০ মার্চ থেকে কারাগারের ভেতরে বন্দীদের জমায়েতে সব ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
আগে একজন বন্দীকে একসাথে ৪-৫ জনের সাথে দেখা করার অনুমতি দেয়া ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন তারা মাত্র দুজনকে একসাথে দেখা করার অনুমতি দিচ্ছেন। ‘দর্শনার্থী এবং বন্দী উভয়কেই মাস্ক পরতে হবে এবং একে অপরের সাথে দেখা করার আগে সাবান এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।’
ইতোমধ্যে বন্দীদের মধ্যে পর্যাপ্ত হাত ধোয়ার সাবান ও মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
কারা ফটকে প্রত্যেক বন্দীকে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে কারাগারে প্রবেশ করতে হয়েছে জানিয়ে আবরার বলেন, ‘নতুন বন্দীদের কারাগারের অভ্যন্তরে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।’
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুব ইসলাম বলেন, কারা সদরদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী গৃহীত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তারা জরুরি অবস্থা না হলে বন্দীদের দর্শনার্থীদের সাথে দেখা করতে নিরুৎসাহিত করছেন। এর জন্য, দর্শনার্থীদের সংখ্যা বর্তমানে ৮০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলে তিনি জানান।
এ ছাড়া যারা ঠাণ্ডা, জ্বর ও কাশিতে ভুগছেন এমন বন্দীদের আলাদা করা হয়েছে। ‘তাদের (অসুস্থ বন্দীদের) প্রথমে কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসা এবং যথাযথ পরীক্ষার পর কারাগারে ফিরে আসতে দেয়া হয়।’
সম্প্রতি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৫ দিন থাকার পর জামিনে মুক্তি পাওয়া আকবর আলী জানান, জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় বেশ কয়েক দিন তাকে কারাগারে পৃথক রাখা হয়েছিল। ‘সে সময় আমাকে করোনভাইরাস আক্রান্তের আশঙ্কায় অন্য বন্দীদের সাথে থাকতে দেয়া হয়নি।’
কারাগারে সবাই মাস্ক পরেন এবং নতুন বন্দীদের পৃথক কক্ষে রাখা হয়। প্রবেশের আগে কারা ফটকে শরীরের তাপমাত্রাও পরিমাপ করা হয় বলে তিনি যোগ করেন।
গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার নেছার আলম জানান, তারা নতুন বন্দীদের আলাদা করে রাখতে কারাগারের অভ্যন্তরে একটি নতুন ওয়ার্ড স্থাপন করেছেন। ‘আমরা ওয়ার্ডে ১৪ দিনের জন্য নতুন বন্দীদের কোয়ারেন্টাইন রাখার ব্যবস্থা করেছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা দুজনের বেশি দর্শনার্থীকে একজন বন্দীর সাথে দেখা করতে দিচ্ছেন না, ফলে তাদের সংখ্যা (দর্শনার্থীদের) হ্রাস পেয়েছে।
কোভিড -১৯ -এ বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।