হোসেন সরদারের কুল বাগান দূর থেকে দেখলে মনে হবে লাল আর সবুজের মেলা বসেছে সেখানে। কাছে গিয়ে বোঝা যায়, লাল কুলের ভরে নুয়ে পড়েছে গাছের ডাল। মাটি থেকে গাছের ডগা আর ডগা থেকে মাটি পর্যন্ত কুল আর কুল।
আরও পড়ুন: ভাসমান সবজি চাষে সাবলম্বী খুলনার ভূমিহীন কৃষকরা
হোসেন সরদার নামে এই কৃষক জানান, এক একর (তিন বিঘা) জমিতে কুলের চাষাবাদ করেছেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে আপেল কুল, কাশ্মিরী কুল এবং সাতক্ষীরার নারিকেল কুল। আকর্ষণীয় রং হওয়ায় বাজারে এ কুলের কদরও দিন দিন বাড়ছে। পাইকাররা বাগান থেকে সেই কুল কিনছেন ১৪০ টাকা প্রতি কেজি দরে। চলতি বছর এই বাগান থেকে ৬/৭ লাখ টাকার কুল বিক্রির আশা করছেন হোসেন।
আরও পড়ুন: পুনরায় ৪ দেশে বাজার ফিরে পেয়েছে খুলনার কাঁকড়া
স্থানীয়রা বলছেন, হোসেন সরদার কৃষি কাজে লেগে থাকে এবং সে গাছ নিয়ে গবেষণাও করে। তার বাগানের প্রতিটি গাছের ডালের গোড়ার দিক থেকে ২/৩ ইঞ্চি পরিমাণ ছাল তুলে ফেলা হয়েছে। ফলে এ বছর অন্য কারো কুল গাছে ফলন ভাল না হলেও তার গাছের ডাল কুলের ভরে ভেঙ্গে পড়ছে। হোসেন সরদার শ্রবণপ্রতিবন্ধী হলেও সে স্বাবলম্বী।
আরও পড়ুন: ইউরোপে কমলেও, খুলনাঞ্চলের চিংড়ির রপ্তানি বেড়েছে জাপানে
জানা যায়, নিজে প্রাথমিকের গন্ডি পার হলেও ছেলে-মেয়েদেরকে উচ্চ শিক্ষিত করেছেন হোসেন। সম্পদের পাশাপাশি এই কৃষি কাজ তাকে এনে দিয়েছে সম্মানও। প্রতিদিনই তার বাগান দেখতে ভিড় করেন বহু মানুষ। আর স্থানীয় কৃষকরা তার কাছে যান কৃষি পরামর্শ নিতে।
হোসেন সরদার জানান, তার ৯০টি কুল গাছ রয়েছে যা সংগ্রহ করা হয়েছে পাইকগাছা গদাইপুর থেকে। গাছগুলোর বয়স দুই বছর। এ বছর যে ফলন হয়েছে তা থেকে ৬/৭ লাখ টাকা আয় হবে এবং আগামীত ফলন আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৪০০ কোটি টাকার বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে খুলনা
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘হোসেন সরদার সহজ সরল প্রকৃতির একজন মানুষ। কৃষি কাজ করে তিনি এখন স্বাবলম্বি। কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ নিয়ে তিনি কাশ্মিরী, আপেল কুল এবং সাতক্ষীরার নারিকেল কুলের চাষাবাদ করেছেন। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। কৃষি কাজে তার অনেক দক্ষতা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: খুলনায় অবৈধ অ্যাম্বুলেন্সের ছড়াছড়ি, চালকের আসনে সহকারী
এ বিষয়ে খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারনের অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘হোসেন সরদার একজন ভালো কৃষক। কুল চাষাবাদে সে তার নিজের প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। আর ফলনও ভালো হয়েছে। যদিও এ বছর জেলার অন্যান্য জায়গায় কুলের ফলন তেমন ভালো হয়নি ‘