এক সময় এ এলাকার মানুষ কৃষি কাজসহ দৈনন্দিন নানা কাজ সম্পন্ন করতো এই নদের পানি দিয়ে। যশোরের সুনাম করতে গেলেও সবার আগে কপোতাক্ষ নদের কথাই উঠে আসে। কিন্তু সেই কপোতাক্ষ নদে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ক্ষতির দিকে টেলে দেয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কালের বিবর্তনে নদের নাব্যতা সংকট, অবৈধভাবে নদের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা অবৈধ দখলদারদের অট্টালিকা ও বাঁকড়া বাজারের ময়লা-আবর্জনা হরহামেশা ফেলার কারণে নদটি যেমন সরু হয়েছে তেমনি পানির প্রবাহ একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। হারিয়ে ফেলেছে তার ঐতিহ্য চিরচেনা চেহারা ও রূপ যৌবন। শুধুমাত্র দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। বাঁকড়া বাজারের অধিকাংশ ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য এই নদে ফেলায় তা দ্রুতই ভরাট হয়ে যাচ্ছে, বাড়ছে পরিবেশ ও বায়ূ দূষণ। ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগ-ব্যাধি। দূষণের কারণে ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে নদের পানি।
সরজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বাঁকড়া বাজারের ময়লা-আবর্জনা ও পোল্টি মুরগী ব্যবসায়ীদের মুরগীর বিষ্ঠা, উচ্ছিষ্টাংশসহ যাবতীয় দূষিত ও বিষাক্ত ময়লা-আবর্জনা প্রকাশ্যে সেতু ঘাটে কপোতাক্ষ নদে ফেলা হচ্ছে। নদের কিনারায় ময়লার স্তুপ জমে পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লার দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সেতু ওপর দিয়ে চলাচলরত মানুষের জীবন যেন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। নদের পানির স্রোত প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকায়। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন কর্মকাণ্ড চললেও এর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কপোতাক্ষ নদে এভাবে ময়লা ফেলা হলে অদূর ভবিষ্যতে সেতু বানানোর প্রয়োজন হবে না।
বাঁকড়া বাজারের ব্যবসায়ী ও পরিচ্ছন্নকর্মীরা জানান, বাজারের ময়লা ফেলার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় নদেই ফেলা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাঁকড়া বাজার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আ. সামাদ বলেন, আমরা বর্ষার পরপরই আমাদের নেতা-কর্মীদের ও উপজেলা প্রশাসনকে ময়লা ফেলার জন্য জায়গা তৈরি করে দেয়ার বিষয়টি অবগত করেছি। তারা আশ্বাসও দিয়েছেন, কিন্তু কবে হবে সেটা জানা নেই।’
এলাকার সচেতন মহল ও সুধীজনেরা ঐতিহ্যবাহী কপোতাক্ষ নদে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও নদের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।