সুনামগঞ্জের ছাতকে তিনজন মেম্বার প্রার্থীর কপাল মন্দ। দু’জন মেম্বার প্রার্থী জীবিত থেকেও জাতীয় পরিচয়পত্রে তারা ‘মৃত’ এবং একজন প্রার্থীর নিজ ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে ভোট স্থানান্তর করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে।
এই বিষয়ে সংশোধনের জন্য প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচন ও ইউএনও অফিসে যোগাযোগ করেও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না। ফলে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়া তাদের অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এমন ঘটনায় এলাকার সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলছে।
আরও পড়ুন: তিন দশক গান গেয়েই চলছে অন্ধ বাউলের সংসার
এনআইডি কার্ড চেক যাছাই করে জীবিত মানুষদেরকে মৃত বিষয়টি প্রার্থীরা যেমন সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন তেমনি নির্বাচন অফিসের দায়িত্বশীলদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
এই বিষয়ে গত রবিবার ছাতক উপজেলা নির্বাচন কমিশনার বরাবরে পৃথক তিনটি অভিযোগ করেছেন আলী আহমদ, কমর আলী ও ছিদ্দেকুর রহমান নামের তিনজন ভুক্তভোগী।
উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ব্রাক্ষণগাঁও গ্রামের মৃত আসক আলীর ছেলে মো. আলী আহমদের অভিযোগ, ২০১৬ সালে সম্ভাব্য মেম্বার প্রার্থী হিসেবে ৮নং ওয়ার্ডে তিনি নির্বাচন করার ইচ্ছা করেছিলেন। এ বছরও তার আগ্রহ ছিল নির্বাচনে অংশ নেয়ার। কিন্তু গত ১ জুলাই গোবিন্দগঞ্জ পূবালী ব্যাংক শাখায় একাউন্ট করতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানান তার (৯০১২৩৮৫৫৭৬১৭৪) জাতীয় পরিচয়পত্রটি অনলাইনে দেখাচ্ছে না। পরে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানতে পারেন জাতীয় পরিচয়পত্রে তাকে মৃত দেখিয়ে পরিচয়পত্রটি বাতিল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে চলছে নবান্নের প্রস্তুতি
ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ব্রাক্ষণগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল আউয়ালের ছেলে মো. কমর আলী’র জাতীয় পরিচয়পত্রেও তাকে মৃত দেখিয়ে বাতিল করা হয়েছে। তার অভিযোগে, ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮নং ওয়ার্ড থেকে মেম্বার প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। সম্প্রতি করোনার টিকার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (৯০১২৩৮৫৫৭৬৩০৯) নিয়ে নিবন্ধন করতে গেলে তা হয়নি। পরে ওই কার্ড নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যাওয়ার পর জানতে পারেন তিনি মৃত! এ জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রটি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চাকল পাড়া গ্রামের মো. আবদুল আমিনের ছেলে মো. ছিদ্দেকুর রহমানের ৯নং ওয়ার্ডে ভোট স্থানান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাচন কমিশনে পৃথক একটি অভিযোগে উল্লেখ করেন, এ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে নির্বাচন করার জন্য তিনি কাজ করছেন। কিন্তু গত ৯ অক্টোবর একটি ফরম পূরণ করতে গেলে জানতে পারেন তিনি ৭নং ওয়ার্ডের ভোটার নন! একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বেরাজপুরে তার ভোট স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাকে নির্বাচনে প্রার্থী থেকে বঞ্চিত করার জন্য বর্তমান জনপ্রতিনিধিসহ নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে এমন কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: রমাকান্তরা আবার স্কুলে যেতে চায়
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান জানান, এমন কাজের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তদন্তের মাধ্যমে অন্যায়কারীদের চিহিৃত করে দেশের আইন অনুযায়ী শাস্তি হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
প্রার্থীদের অভিযোগের কথা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফয়েজুর রহমান জানান, এগুলো কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।