এদিকে কৃষকদের বোরো আবাদে আগ্রহ না থাকায় এবার খুলনায় কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ৯০০ মেট্রিক টন বোরো বীজ অবিক্রীত রয়েছে।
গত ৯ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর আঘাতে খুলনায় ২৫ হাজার হেক্টর আমন ধান ও ৮৬৪ হেক্টর জমির শাক সবজি নষ্ট হয়। কারেন্ট পোকার আক্রমণে খুলনার রূপসা, বটিয়াঘাটা ও ডুমুরিয়া উপজেলার কয়েকশ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হন খুলনার অন্তত ৩ লাখ ১৬ হাজার কৃষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা, কালিগঞ্জ ও বাগেরহাটের বিএডিসি’র গুদামে ২ হাজার মেট্রিক টন বীজ বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে বিআর-২৬, বিআর-২৮, ব্রি-২৯, ব্রি-৪৭, ব্রি-৫৮, ব্রি-৬৩, ব্রি-৬৭, ব্রি-৭৪, ব্রি-৮১ ও ব্রি-৮৬ জাতের ধান উল্লেখযোগ্য। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ওই তিন জেলার ৪০৫ জন ডিলার ১ হাজার ১৭১ মেট্রিক টন বীজ বিক্রয় করেন।
বাগেরহাটের ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারি, শরণখোলা ও খুলনার ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, ফুলতলা, তেরখাদা এবং সাতক্ষীরার কলারোয়া, তালা ও আশাশুনি উপজেলায় ব্রি-২৮ জাতের বীজের চাহিদা বেশি।
বিএডিসি (বীজ) খুলনার উপপরিচালক মো. লিয়াকত আলী জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণি ও বুলবুলের কারণে গত মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষকরা। এছাড়া বোরো এবং আমনের ন্যায্যদাম না পাওয়ায় এবারও বোরো চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন তারা। এছাড়া এবার পেঁয়াজের মূল্য বেশি হওয়ায় আমন চাষিরা কিছুটা সেদিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা এলাকার কৃষক লুৎফর রহমান বাচ্চু বলেন, গত মৌসুমে বোরোর মণপ্রতি উৎপাদন খরচ ৯২০ টাকা হলেও তা বিক্রি হয়েছে ৫৮০ টাকা দরে। এছাড়া আমনের ন্যায্য মূল্য না পাওয়াতেও এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, ব্রি-২৮ জাতের বোরো বীজের চাহিদা বেশি থাকলেও কৃষকরা বেসরকারি কোম্পানির হাইব্রিড বীজও কিনেছেন। গত মৌসুমে ভালো ফলন দিয়েছিল ব্রি-২৮ জাতের বীজ। উপজেলার ২১ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়।
পাটকেলঘাটা এলাকার ডিলার কেশব কুমার সাধু জানান, উপজেলার ধানদিয়া, কুমিরা, খলিশখালি, শালিখা ও মির্জাপুর এলাকায় সরকারি বোরো বীজের চাহিদা কম। এবার অনেক কৃষকই বেসরকারি কোম্পানির হাইব্রিড বীজ দিয়ে বীজতলা তৈরি করেছেন।