মঙ্গলবার ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটি একটি বড় ইতিবাচক দিক। নারীর ক্রমবর্ধমান ক্ষমতায়নের সাথে সাথে আমাদের উন্নয়ন যাত্রাও অব্যাহত থাকবে। একজন শিক্ষিত মা আমাদের একটি শিক্ষিত সমাজ দিতে পারে। এভাবে দেশের উন্নয়নে কার্যকরভাবে অবদান রাখতে পারে।’
নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রণী ভূমিকার প্রশংসা করে মেজর জেনারেল গীতি বলেন, অতীতে যদিও নারীদের উপস্থিতি দৃষ্টির অন্তরালে থাকতো, তবে এখন তারা সামনের দিকে এগিয়ে আসছে, যা দেশের উন্নয়নে জন্য খুবই ইতিবাচক দিক।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং সংসদের বিরোধী দলের নেতাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীরা অধিষ্ঠিত থাকায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি।
আগামী পাঁচ বছর পর বাংলাদেশকে কোথায় দেখতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ডা. সুসানে গীতি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আরো অনেক উঁচুতে দেখতে চাই। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এসেছি। আমরা যেন আরো উন্নত হতে পারি।’
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশিদের অবদান সম্পর্কে তিনি বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনে অগ্রাধিকারের দিক দিয়ে বাংলাদেশ শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। মিশনের প্রতি বাংলাদেশিদের আত্মোৎসর্গের জন্য বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অন্যরা খুবই পছন্দ করে, ভালোবাসে।
দেশের প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবদান প্রসঙ্গে মেজর জেনারেল গীতি বলেন, দেশের সংকটময় সময়সহ সকল প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রানা প্লাজা ধসে এগিয়ে আসা, উন্নয়নমূলক কাজ যেমন- হাতিরঝিল, ফ্লাইওভার নির্মাণে সেনাবাহিনীর ভূমিকা রয়েছে।
‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে আমি গর্ববোধ করি যারা সর্বদা দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ করে,’ যোগ করেন তিনি।
সবক্ষেত্রে অবদান রাখা নারী সমাজকে উৎসাহিত করতে তিনি কঠোর পরিশ্রম, কাজের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে এবং দেশের জন্য কাজ করার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, মেজর জেনারেল ডা. সুসানে গীতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৫ সালে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী চিকিৎসক হিসেবে ক্যাপ্টেন পদবিতে যোগদান করেন। ১৯৯৬ সালে প্রথম নারী হিসেবে হেমাটোলজিতে এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন সুসানে। এ ছাড়া তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন এবং বিভিন্ন সামরিক হাসপাতালে প্যাথলজি বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এমবিবিএস, এমসিপিএস, এফসিপিএস, এমএমএডি, বর্তমানে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তার স্বামী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আসাদুল্লাহ মো. হোসেন সাদ একজন সফল সামরিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সেনা সদর দপ্তরে বাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সামছুল হক সুসানে গীতিকে মেজর জেনারেল পদবির ব্যাজ পরিয়ে দেন।