শুক্রবার নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড
ডব্লিউএইচও প্রধান উল্লেখ করেন, ইতোমধ্যে ৪২টি দেশ করোনার বিভিন্ন ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে যা ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র পেয়েছে, এর মধ্যে ৩৬টি উচ্চ আয়ের দেশ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘স্পষ্টতই একটি সমস্যা আছে কারণ নিম্ন এবং বেশিরভাগ মধ্যম আয়ের দেশগুলো এখনও ভ্যাকসিন পায়নি এবং অবশ্যই কোভ্যাক্সের মাধ্যমে এর সমাধান করা উচিত।’
কোভিড-১৯ টিকা কোনো ‘জাদুর কাঠি’ নয়: ডব্লিউএইচও
টেড্রস বলেন, ধনী দেশগুলো এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ ভ্যাকসিন ক্রয় করায় এটা স্পষ্ট যে জোটের মধ্যেও মধ্য ও উচ্চ আয়ের দেশগুলো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করছে, প্রত্যেকের জন্য ভ্যাকসিনের সম্ভাব্য দাম বাড়ছে, টিকা দরিদ্রতম এবং সর্বাধিক প্রান্তিক দেশগুলোর নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ন্যায্যভাবে টিকাদান ‘জীবন বাঁচায়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা স্থিতিশীল করে’ এবং ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সহায়ক হতে পারে।’
বিশ্বকে একসাথে মহামারি মোকাবিলার আহ্বান ডব্লিউএইচও প্রধানের
ভাইরাসগুলোর পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক উল্লেখ করে ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, ‘সংক্রমণ হ্রাসে যদি আমরা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করি এবং যথাযথভাবে টিকা না দেয়া হলে… আমরা এটির (কোভিড-১৯) বিস্তারে সাহায্য করছি।’
তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমি দেখতে চাই যে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারীরা কোভ্যাক্সের মাধ্যমে এর সরবরাহ এবং ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দেবে এবং আমি দেশ ও প্রস্তুতকারীদের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বন্ধ করার অনুরোধ করছি।’
সাক্ষাত না করা
টেড্রস সতর্ক করেন যে মহামারি চলাকালীন এখন অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি সময়, যখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে। তাই জরুরি স্বাস্থ্য পরামর্শ মেনে চলার তাগিদ পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করলে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে: ডব্লিউএইচও
‘যেখানে বেশি মাত্রায় সংক্রমণ বা বেশি সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে সেখানে মানুষের উচিত অন্যদের সাথে সাক্ষাত না করা, বিশেষ করে ঘরের অভ্যন্তরে থাকা,’ বলেন টেড্রস।
তিনি আরও বলেন, ‘ভার্চুয়ালি সাক্ষাত করা ভালো। তবে আপনার যদি অন্যদের সাথে দেখা করতেই হয়, সেটি সাবধানতার সাথে এবং সঠিক সতর্কতা অবলম্বন করে করতে হবে।’
জিত বা হার ‘একসাথে’
স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, ‘মনে রাখবেন এই মহামারি শেষ করা মানবতার অন্যতম একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং পছন্দ করি বা না করি, একসাথেই আমরা করোনা মহামারির বিরুদ্ধে হারবো বা জিতব।’
টেড্রস সতর্ক করে বলেন, ‘কোনো দেশই ব্যতিক্রম নয়। অনেক দেশে তাদের সকল জনগণকে টিকা প্রদান করছে, যেখানে অনেকে ভ্যাকসিনের সরবরাহ পায়নি।’
বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যে করোনা এখনও উদ্বেগের বিষয়: ডব্লিউএইচও
‘বিজ্ঞান আমাদের জন্য আশীর্বাদ, আসুন ঝুঁকির মধ্যে থাকা ব্যক্তিদের জীবন রক্ষার সুযোগটি আমরা নষ্ট না করি,’ বলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান।
এর আগে সম্প্রতি মহামারির অবসান ঘটানো এবং উন্নত ব্যবস্থা গ্রহণের সকল সুযোগ নেয়ার আহ্বান জানান টেড্রস।
তিনি বলেন, ‘জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগ জানিয়ে জনগণের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে যখন আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতার কথা বলেছিলাম তখন অনেক দেশই আমাদের কথা শুনেছিল।’
তারপর থেকে তারা গত ৪ ফেব্রুয়ারি দেয়া নির্ধারিত প্যারামিটারগুলো অনুসরণ করে জাতিসংঘ সংস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে, ব্যাখ্যা করেন তিনি।
'দেরি করবেন না'
ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, ‘দেশের জরুরি প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা দেখার সর্বোত্তম সময়টি হলো জরুরি অবস্থার সময়। যখন আপনি পরিষ্কারভাবে দেখতে পারবেন যে কোনটি কাজ করে, কোনটি করে না এবং আপনাকে কোথায় কোথায় উন্নতি করতে হবে।’
কোভাক্স জোটে যোগ দিয়েছে ১৮৪ দেশ, অর্থনীতি: ডব্লিউএইচও প্রধান
‘এবং একটি দেশ যেখানেই থাকুক না কেন এটি একটি পুরো-সরকার এবং সমাজের সম্পূর্ণ প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে বদলে যেতে পারে। এখনও আশা আছে এবং এখন এই ভাইরাস মোকাবিলায় প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার সময় এসেছে। আমরা একসাথে জীবন রক্ষা ও জীবিকা নির্বাহ করা এবং এই মহামারিটি শেষ করতে পারি,’ বলেন তিনি।