শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে শুক্রবার দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
দ্বীপ দেশটিতে চরম অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করে তার বাসভবনের কাছে বিক্ষোভ এবং দেশব্যাপী বিক্ষোভ পরিকল্পনার একদিন পর এ আদেশ জারি হলো।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পাবলিক সিকিউরিটি অধ্যাদেশ আরোপ করেছেন যা তাকে জননিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা রক্ষা, বিদ্রোহ দমন, দাঙ্গা বা নাগরিক বিশৃঙ্খলা বা প্রয়োজনীয় সরবরাহের রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দেয়।
এছাড়া তিনি গ্রেপ্তার অনুমোদন, যে কোনো সম্পত্তির দখল এবং যে কোনো স্থানে তল্লাশি করতে পারবেন। এছাড়া তিনি যেকোনো আইন পরিবর্তন বা স্থগিতও করতে পারেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ
প্রেসিডেন্টের বাসভবনের কাছে বিক্ষোভের জেরে কয়েক ডজন মানুষককে গ্রেপ্তারের একদিন পর এই আদেশ জারি করা হয়েছে। এছাড়া রবিবার দেশব্যাপী জনবিক্ষোভের ডাকও দেয়া হয়েছে।
এদিকে রাজধানী কলম্বোর উপকণ্ঠে আরোপ করা কারফিউ শুক্রবার সকালে তুলে নেয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা দীর্ঘ লোডশেডিং ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতির জন্য রাজাপাকসেকে দায়ী করেছেন।
শ্রীলঙ্কার বিশাল ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং বৈদেশিক রিজার্ভ হ্রাস পাচ্ছে। দেশটি আমদানির জন্য অর্থ পরিশোধেও লড়াই করছে। মানুষ জ্বালানির জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন। পর্যাপ্ত জ্বালানি না থাকায় দেশটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্ল্যান্ট পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এ জন্য প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা দেশটিতে বিদ্যুৎ থাকছে না।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার ঋণের অনুরোধ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি: মোমেন
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দুর্দশার জন্য দায়ী করা হচ্ছে- দেশটির সরকারের রপ্তানি ক্ষেত্রে বৈচিত্র না আনা এবং চা, পোশাক ও পর্যটনের মতো ঐতিহ্যবাহী উৎসের ওপর নির্ভরতা এবং আমদানি করা পণ্য ভোগের সংস্কৃতিকে।
করোনা মহামারিও শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে গত দুই বছরে দেশটির সরকার ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
লঙ্কান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে সাড়ে ১৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে যা গত মাসে ছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ এবং তা আরও বাড়তে পারে।