ইউক্রেনের অবরুদ্ধ মারিউপোলে পাঁচ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে শহরটির মেয়র জানিয়েছেন।
কিয়েভের আশপাশের কয়েকটি শহর ছেড়ে যাওয়ার আগে রুশ সৈন্যরা নির্বিচারে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে এমন অভিযোগ এনে গত কয়েকদিন ধরে মৃতদের জড়ো করা অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বোইচেঙ্কো বলেছেন, কয়েক সপ্তাহের রুশ বোমাবর্ষণ এবং রাস্তার লড়াইয়ে নিহত পাঁচ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিকের মধ্যে ২১০ জন শিশু।
তিনি বলেন, রুশ বাহিনী হাসপাতালগুলোতেও বোমাবর্ষণ করেছে, যেখানে এক শিশুসহ ৫০ জন পুড়ে মারা গেছে।
বোইচেঙ্কো বলেন, শহরের ৯০ শতাংশেরও বেশি অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। আজভ সাগরের কৌশলগত দক্ষিণের শহরটিতে হামলার ফলে খাদ্য, জল, জ্বালানি ও ওষুধ বন্ধ হয়ে গেছে এবং ঘরবাড়ি ও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, চার লাখ ৩০ হাজার জনসংখ্যার শহরটিতে এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ আটকা পড়েছে। রেড ক্রসের সাথে একটি মানবিক ত্রাণ কনভয় কয়েকদিন ধরে শহরে প্রবেশের চেষ্টা করছে।
পড়ুন: গণবিক্ষোভের মুখে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে।
একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, কিয়েভ ও উত্তরাঞ্চলীয় চেরনিহিভ এলাকা থেকে আনুমানিক ২৪ হাজার বা তার চেয়ে বেশি সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করেছে রাশিয়া। আর এর মূল উদ্দেশ্য হলো পুনরায় সংগঠিত হয়ে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে হামলা করা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার রাতের ভাষণে অভিযোগ করে বলেছেন, রাশিয়ান সামরিক বাহিনী পূর্বে নতুন আক্রমণের প্রস্তুতির জন্য তার বাহিনী তৈরি করছে। তবে ক্রেমলিন জানিয়েছে তাদের লক্ষ্য ইউক্রেনের বেশিরভাগ রুশভাষী ডনবাসকে ‘মুক্ত করা’।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনও যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা লড়াই করব এবং পিছপা হব না। রাশিয়া সিরিয়াসলি শান্তির চেষ্টা শুরু না করা পর্যন্ত আমরা আত্মরক্ষার জন্য সম্ভাব্য সব বিকল্প খুঁজব। এটা আমাদের মাটি। এটাই আমাদের ভবিষ্যৎ। এবং আমরা তাদের ছেড়ে দেব না।’
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ ডনবাসে বসবাসকারী নাগরিকদের এখনই সেখান থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।